সৌদি আরব নয় এবার সোমালিয়ার সাথে মিলে ঈদ করলো ঢাকা ও চাঁদপুরের চল্লিশ গ্রাম
নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রতিবার সৌদি আরবের সাথে মিল রেখে ঈদ করলেও এবার সোমালিয়া ও নাইজেরিয়ার সাথে মিল রেখে ঢাকা সদরঘাটে ও চাঁদপুরের ৪০ গ্রামে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে উৎসবমুখর পরিবেশে উদযাপিত হয়েছে পবিত্র ঈদুল ফিতর।
সকাল সাড়ে ১০টায় ঢাকা বদরপুর দরবার ও হাজীগঞ্জের সাদরা দরবার শরীফ জামে মসজিদে সকাল ১০টায় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। প্রধান জামাতে ইমামতি করেন বর্তমান পীর মুফতি আল্লামা যাকারিয়া চৌধুরী আল মাদানী। এ সময় মুসল্লীরা ঈদের জামাতে অংশ নেয়। পরে ক্রমান্বয়ে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন মসজিদে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়।
ঢাকা, হাজীগঞ্জ, ফরিদগঞ্জ, মতলব, কচুয়া ও শাহরাস্তিসহ ৫ উপজেলার প্রায় ৪০টি গ্রামে আজ ঈদ উদযাপিত হচ্ছে। নামাজ শেষে দেশের শান্তি কামনায় মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।
পীর মুফতি আল্লামা যাকারিয় চৌধুরী আল মাদানী বলেন, ১৯২৮ সার থেকে বিশ্ব মুফতী আল্লামা ইসহাক রহ.কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত চাঁদপুর জেলার সাদরা ঐতিহাসিক দরবার শরীফের ধর্মপ্রাণ মুসলমানগণ সর্বপ্রথম নবচঁন্দ্র দর্শনের নিভরযোগ্য সংবাদের ভিত্তিতে প্রতিবছরই ঈদুল ফিতর, ঈদুল আযহাসহ ধর্মীয় সকল উৎসবাদি পালন করে থাকি।
আজকের ঈদ উদযাপনের বিষয়ের প্রশ্ন করলে দরবারের বড় পীরজাদা পীর ড. মুফতি বাকী বিল্লাহ মিসকাত চৌধুরী বলেন, গতকাল সোমালিয়া, নাইজার ও পাকিস্তানে চাঁদ দেখেছে। ওই সংবাদ নির্ভরযোগ্য ভিত্তিতে প্রাপ্তহয়ে হানাফী মাজহাবের চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত মোতাবেক আজ আমরা ঈদুল ফিতর উদযাপন করছি।।
পীর সাহেব বলেন, বাংলাদেশের সংখ্যাগরিষ্ট মানুষই আমরা মুসলমান, আমাদের ধর্ম ইসলাম এবং আমাদের দেশের মুসলমানগণ অধিকাংশই হানাফী মাযহাবের অনুসারী। ইসলামী শরীয়াহ’র দলীল চারটি তথা কুরআন, হাদীস, ইজমা ও ক্বিয়াস এবং মাযহাব চারটি তথা হানাফী, মালেকী, হাম্বলী ও শাফেয়ী। বিশ্বের অধিকাংশ মুসলমানই এই চারটি মাযহাবের যেকোন একটিকে অনুসরণ করে থাকেন। শরীয়তের চারটি দলীলের আলোকে রিসার্চ করলেই পাওয়া যায়, হানাফী, মালেকী ও হাম্বলী এই তিনটি মাযহাবের চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত হলো, বিশ্বের যে কোন প্রান্তে চাঁদ দেখা গেলে সর্বপ্রান্তের মুসলমানদের উপর রোজা রাখা ফরজ ও ঈদ করা ওয়াজিব হয়ে যায়।
তিনি আরো বলেন, সকলেরই একটি কথা জানা রয়েছে যে ঈদের দিন রোজা রাখা হারাম। তাই সর্বপ্রথম চন্দ্র দর্শনের ভিত্তিতে রোজা রেখে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মুসলমানরা যখন আজ পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপন করছে তখন আমাদের দেশের গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের অধীনে ইসলামিক ফাউন্ডেশন এর আলেমগণ কোন কারনে ঈদের দিনে রোজা রেখে নিজেরাও হারাম কাজ করছেন এবং গোটা জাতির দ্বারাও হারাম কাজ করাচ্ছেন তা আজ জাতির কাছে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। অতএব বিজ্ঞানের যুগে সকল সচেতন মুসলমান বিষয়টি নিয়ে গবেষণা করে রোজা-ঈদ সহ ধর্মীয় সকল উৎসবাদি সঠিক দিনে পালন করা ঈমানী কর্তব্য।