চিন্তার জগতে কুরআন (পর্ব-২)

আব্দুল্লাহ মাসউদ

“ইসলামে নারী-পুরুষের বিধান সমানভাবে আবর্তিত হয়নি”- এই ধারণা মোল্লাদের আড়ষ্টতা।

মকোরান পরিবারকে ‘শত্রু বা আদুওয়া’ বলেছে। যুগল বা দম্পতির একজনকে আরেকজনের জন্য এবং উভয়ের জন্য সন্তানকে। আর সন্তান ও সম্পদকে বলেছে ফিতনা। আবার প্রত্যেকের জন্য, একজন মানুষকে আরেকজনের জন্য ফিতনা বলেছে।

এই যে স্বামী বা স্ত্রী, সন্তান, সম্পদ, এমনকি যেকোন মানুষ রিডিউসড হয়ে এককভাবে নারীতে পর্যবসিত হয়েছে হাদিস লিটারেচার ও তার ব্যাখ্যা গুলোতে সালাফ-সালেহীনের পথ নামে একটা একমাত্র ও শুদ্ধ ধর্মীয় ন্যারেটিভ বা বয়ান হিসেবে এইটা খুব সুস্পষ্টভাবে কয়েকটি ইনসাইট আমাদের দেয়।

এক, কোরান যখন একজন ব্যক্তিকে(রিজাল) উদ্দেশ্য করে কথা বলে তখন সেই ব্যক্তিত্ব যদিও নারী-পুরুষ উভয়কেই বুঝায় তবুও ট্র‍্যাড়িশনাল স্কলারশিপ বলেন আর মোল্লাতান্ত্রিকতা বলেন উভয়ই পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতার জড়তায় ধরে নেয় তা পুরুষকে বুঝাছে, নারীকে নয়; যা খুবই ভুল ব্যাখ্যা।

দুই, কোরান যখন একজন নবী বা রাসুল বা অনুসরণীয় বা বর্জনীয় উদাহরণকে ইমিডিয়েট শ্রোতা বানিয়ে কথা বলে যা বিশ্বাসীদের উপর আপতিত হয় তাও নারী ও পুরুষ উভয়ের উপরই আপতিত হয় সমান ভাবে। এইক্ষেত্রে মোল্লাতান্ত্রিক ব্যাখ্যায় ইতিবাচক ব্যাপারগুলোর পুরুষের সাথে আর নেতিবাচক বিষয়গুলোকে নারীদের সাথে মিলিয়ে যে বয়ান তৈরী করা হয় তাও সেই পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতার জড়তা থেকেই আগত।

তিন, নারীকে যখন ফিতনা আকারে উপস্থাপন করা হয় এককভাবে তখন আমরা খেয়াল করলেই দেখব যে ওখানে মূলত যৌনতাকে কেন্দ্র করে যুক্তি আবর্তিত হয়। এই বিষয়টা মূলত পুরুষতান্ত্রিকতা ও যৌন অবদমনের ককটেলে গঠিত একটা যৌগিক মানসিকতার আলোড়নে দূষিত যুক্তিবোধ ও মননের অবসম্ভাবী ফলাফল।

চার, সমাজে ধর্মীয় ইতিবাচক কর্মকান্ডে নারীদের ব্যাপক অংশগ্রহণের যে অভাব আমরা চারপাশে দেখি তা মূলত বহুদিন ধরে চলে আসা নারীর স্বাধীন সত্তা যাকে কোরান ব্যক্তি(রিজাল) হিসেবে আখ্যায়িত করেছে তা অস্বীকারকারী ট্র‍্যাড়িশনাল ব্যাখ্যার মধ্য দিয়েই প্রতিষ্ঠিত হয়ে আছে।

Related Articles

Back to top button
close