দাওয়াতি মাস এপ্রিল
কাজী মুহাম্মদ কায়েছ উদ্দীন

এপ্রিল থেকে চলছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রসেনা কেন্দ্র ঘোষিত দাওয়াতি মাস। কিন্তু আমরা কয় জন এই দাওয়াতি মাসের কার্যক্রম পালন করছি বা দাওয়াতি কাজ চালাচ্ছি ? শুধু নামে দাওয়াতি মাস ঘোষনা করলে হবে না, সকল সেনানী ভাইদের দাওয়াতি কাজ চালাতে হবে। আজকে আমাদের জন্য দুঃখের বিষয় হল বিভিন্ন বাতেল সংগঠন গুলো সারা বছর জুড়ে দাওয়াতি কার্যক্রম চালায় আর তাদের দল ভারি করার কাজে ব্যস্ত থাকে। কিন্তু আমরা সঠিক দলের অনুসারী হয়েও আদর্শ এবং শান্তিপূর্ণ সংগঠনের কর্মী হয়েও কয়টা দাওয়াতি সভা করেছি? অন্যকে দাওয়াত দিই না বা দাওয়াতি কাজ চালাই না। চালালেও তা অনেক কম। অনেকে হয়তো ভয় পাই!! দাওয়াত দিলে যদি কেউ কিছু বলে, কটাক্ষ করে??
একটা কথা বলি আমাদের প্রিয়নবী মোহাম্মদ (দ:) যখন ইসলামের দাওয়াত দিতেন অনেকে অনেক কথা বলতো,পাগল উপাধি দিয়েছিল,গনক উপাধি দিয়েছিল,যাদুগর বলেছিল, বুড়ি চলার পথে কাটা দিয়েছিল এবং কাফেররা অনেক হত্যার চেষ্টা করেছিল
কিন্তু তিনি কী ইসলাম প্রচার থেকে সরে দাড়িয়েছেন?কোনদিন কী হতাশ হয়েছিলেন?
সেই নবীর উম্মত হয়ে কেন আমরা হতাশ হব?
কেন আমরা ভয় পাবো?
নিজেকে প্রশ্ন করুন?
আমাদের দরকার দাওয়াত দেওয়া গ্রহনের মালিক যাকে দিব সে। গ্রহন করুক বা না করুক দাওয়াত আমাদের দিতেই হবে।আমরা যদি দাওয়াত না দিই তাহলে সে গ্রহন কিভাবে করবে বলুনতো?
আমরা যদি দাওয়াত না দিই সে হয়তো অন্য কোন বাতেল বা সন্ত্রাসী দলের দাওয়াত পেয়ে সেই দলে পাড়ি জমাতে পারে। তাই দাওয়াত আমাদের দিতেই হবে গ্রহন করবে কী করবে না তার সেটা আমার দেখার বিষয় না। আল্লাহ যাকে হেদায়ত করবেন সে নিশ্চই দাওয়াত গ্রহন করবেন।
>নিজেক প্রশ্ন করুন?
আমাদের কী সংগঠনের কর্মী বাড়ানোর দরকার নেই?সংগঠনকে এগিয়ে নেওয়ার দরকার নেই? সৎ, যোগ্য, যুগোপযোগী খোদাভীরু ও দেশপ্রেমি কর্মী বা বানানো এবং সুন্দর, সুশিক্ষিত সমাজ প্রতিষ্ঠার প্রয়োজন নেই?
যদি থাকে তাহলে আমরা দাওয়াতি কাজে এত পিছিয়ে কেন? কেন আমরা এখনো গতানুগতিকে ধারায় পরে আছি? কেন সৃজনশীলতা আনতে চাচ্ছি না বা আনার চেস্টা করছি না?কেন সৃজনশীল মেধাবী ও বাকশক্তিপূর্ণ কর্মী তৈরির চেষ্টা করছিনা?
>সাংগঠনিক শিক্ষা:
আজকে আমরা সাংগঠনিক শিক্ষায় অনেক পিছিয়ে।যেখানে অন্য সব বাতেলপন্থি সংগঠন গুলো আমাদের তুলনাই অনেকাংশে এগিয়ে।কোন তর্ক বা যুক্তির মধ্যে বাতেল সংগঠনের কর্মীরা রেফারেন্স দিয়ে থাকে বিভিন্ন কুরআনের আয়াত, বিভিন্ন হাদিস(সেটা ভুল হোক),বড় বড় মনিষী, বড় লেখকের বাণী বা বিভিন্ন ইতিহাসের ঘটনা। আর সেই ঠিক জায়গাই আমরা দিয়ে থাকি বিভিন্ন হুজুরের মুখ থেকে শোনা কথা বা উক্তি দেখুন আমরা কত পিছিয়ে? আমি বলছিনা হুজুরে মুখের কথা খারাপ বা মিথ্যা।
কিন্তু বাস্তবতার জায়গাই বর্তমানে শিক্ষিত সমাজ বা আম জনতা কোনটা বেশি গ্রহন করে জরিপ চালালে দেখা যাবে কুরআনের আয়াত, হাদিস বা বইয়ের রেফারেন্স। এখন বিচার করার দায়িত্ব আপনাদের দিলাম।
>করণীয় :
তাই আসুন এই দাওয়াতী মাসকে কেন্দ্র করে শুধু এক মাস দাওয়াতী মাস নয় পুরা বছর জুড়ে বেশী বেশী দাওয়াতি কাজ চালায়। আল্লাহ নিজেয় পবিত্র কুরআনে বলেছে “ইন্নি জায়েলুন ফিল আরদে খলিফা” অর্থাৎ, আমি তোমাদেরকে আমার প্রতিনিধি হিসাবে পাঠিয়েছি।
তাই আসুন দাওয়াতি সভা করি নতুন নতুন সমর্থক,কর্মী সৃষ্টি করি। আর দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করি, অর্থ সহ কুরআন পড়ি, সাংগঠনিক সিলেবাস অনুযায়ী সকল সাংগঠনিক বই,হাদিস,বিভিন্ন মনিষী ও বড় বড় লেখকের বই অধ্যায়ন করি এবং নিজেকে একজন খোদাভীরু,নবী প্রেমিক, ইসলাম প্রিয় দক্ষ, সুশিক্ষিত, সচেতনমূলক যুগপ্রযুগি দেশপ্রেমিক ও দায়িত্বশীল মানুষ এবং সাংগঠনিক কর্মী হিসাবে গড়ে তুলি।
ইসলামের সঠিক রূপরেখা আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা’আত এর আদর্শবাহী এ সংগঠনকে বাংলাদেশ নয় পুরো বিশ্বের বুকে আদর্শ বাহী সঠিক,সুশিক্ষিত, শান্তিপূর্ণ ইসলামী রাজনৈতিক সংগঠন হিসাবে পরিচিত করি এগিয়ে নিয়ে যায়। সুন্নীয়তের কর্মসূচীকে আরো এগিয়ে নিয়ে যায় এবং শক্তিশালী করে তুলি।
কেন্দ্রীয় পরিষদের কাছে অনুরোধ যাতে দাওয়াতি মাসের জন্য আরো নতুন কর্মসূচী গ্রহন করে,এবং সাংগঠনিক শিক্ষার কর্মীদের শিক্ষিত করার নতুন উদ্যেগ গ্রহন করে।সৃজনশীল কর্মী তৈরির ক্ষেত্রে সৃজনশীল কর্মসূচী গ্রহন করে।
এসো হে তরুন-যুবক মুক্তির পথে শান্তির পথে। বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রসেনা ডাকছে তোমাই ইসলামের সঠিক ও সুশীতল ছায়াতলে। নিজেকে একজন খোদাভীরু, সুশিক্ষিত, আদর্শিক, দেশপ্রেমিক ও যুগোপযোগী সুনাগরিক হিসাবে গড়ে তোলতে এবং নিজের জীবনকে সুসংগঠিত ভাবে গঠন করতে।