আজ শহীদ লিয়াকত দিবস

নিজস্ব প্রতিনিধি

মুহাম্মদ হাবিব উল্লাহ ছিল তাঁর মূল নাম। মা ডাকতেন লিয়াকত আলী নামে। সে নামটিতেই পরিচিত শহীদ লিয়াকত। চার ভাই-বোনের মধ্যে সর্বকনিষ্ঠ লিয়াকত আলী জন্মগ্রহণ করেন বাবার মৃত্যুর তিন মাস পর, ১৯৬৪ সালে।

জন্ম থেকেই পিতৃহারা শহীদ লিয়াকত অল্প সময়েই নিজের মেধা, বিনয় ও সততার মাধ্যমে সকলের মনিকোঠায় স্থান করে নেন। অভাব-অনটনের কারণে শহীদ লিয়াকতের অন্যান্য ভাই-বোনেরা যথেষ্ট পড়াশোনা করতে না পারলেও লিয়াকত তাঁর অন্যান্য ভাই-বোনদের উৎসাহ-উদ্দীপনা, এবং বিশেষত মায়ের দোয়া ও প্রেরণাকে সঙ্গী করে নিজের পড়াশোনা চালিয়ে গেছেন নিয়মিত।

 

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রতিটি পর্যায়ে প্রথম স্থানে নিজের নাম পোক্ত করে রাখতেন মেধাবী ও অত্যন্ত সম্ভাবনাময় তরুণ লিয়াকত আলী। এস এস সি ও এইচ এস সি, উভয় পরীক্ষায় প্রথম বিভাগে কৃতিত্বের সহিত পাশ করে নিজের মেধার স্বাক্ষর রাখেন লিয়াকত আলী। কিন্তু হায়! ঘাতক-হায়েনা ও উগ্র-সন্ত্রাসবাদী চক্র, ইসলামের নাম ভাঙ্গিয়ে জঙ্গীবাদী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত বিভ্রান্ত সংগঠন ছাত্রশিবির অতীব সম্ভাবনাময় এই তরুণকে নিজের সাফল্য বজায় রাখতে দেয়নি। মাঝপথেই কেড়ে নিয়েছে রাসুল (দ.)-এর আদর্শে উজ্জীবিত, পরহেজগার, মোত্তাকি ও অনুসরণযোগ্য সেনানী লিয়াকত আলীর প্রাণ।

 

ইসলামী রাজনীতির জগত থেকে ঝরে পড়ে গেলো এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। এভাবে ঝরে গেছে আরো বহু প্রাণ; যাঁদের রক্তের দানে চির সবুজের এই বাংলায় আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা’আত এর পতাকাবাহী সুফিবাদী শান্তিপ্রিয় ছাত্ররাজনৈতিক সংগঠন, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রসেনা উজ্জ্বল জ্যোতিষ্কের ন্যায় দাঁড়িয়ে আছে অকুতোভয় বীর সেনানীদের সঙ্গী করে।

 

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রসেনার জন্য জীবন দানকারী প্রত্যেক বীর সেনানী ছাত্রসেনার প্রত্যেক কর্মীর আদর্শ। তাই ছাত্রসেনা তাঁর হারানো সকল নক্ষত্রকে স্মরণ করে প্রতিমুহূর্তে, প্রত্যেক ক্ষেত্রে৷ তারই ধারাবাহিকতায় ৮৬ সাল হতে প্রতিবছর ছাত্রসেনা যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করে আসছে শহীদ লিয়াকত দিবস।

 

১০ই এপ্রিল, লিয়াকত দিবসকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রসেনা কেন্দ্রীয় পরিষদ উল্লেখযোগ্য কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। যার অংশ হিসেবে আজ সকাল ৮টায় চট্টগ্রামের চান্দগাঁও মৌলভী পুকুর পাড় সংলগ্ন শহীদ লিয়াকত (রহ.) ভাই এর মাজার জিয়ারত, এবং পুষ্পস্তবক অর্পন করবে ছাত্রসেনা কেন্দ্রীয় পরিষদ। এছাড়াও লিয়াকত ভাই এর পরিবারের তিন ভাই ও এক বোনের জন্য রমজানের ইফতার সামগ্রী প্রদান করে যথাসম্ভব তাঁদের পাশে দাঁড়াবে ছাত্রসেনা কেন্দ্রীয় পরিষদ। ধারাবাহিক কর্মসূচির অংশ হিসেবে এছাড়াও সারাদেশব্যাপী দিবসটিকে যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করবে ছাত্রসেনার জেলা, উপজেলাসহ প্রত্যেক স্থানীয় শাখা।

Related Articles

Back to top button
close