ছাত্রসেনা রামু উপজেলা শাখার ইফতার সামগ্রী বিতরণ ও ইফতার মাহফিল সম্পন্ন

ছফিউল্লাহ জাবেদ, রামু

বাংলাদেশের অহিংস ছাত্র রাজনীতির মডেল বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রসেনা রামু উপজেলা শাখার উদ্দ্যোগে ১৭ রমজান ঐতিহাসিক পবিত্র বদর দিবস উপলক্ষ্য  ০ এপ্রিল (জুমাবার) অসহায়, গরিব ও এতিম-মিসকিন মানুষের মধ্যে ইফতার সামগ্রী বিতরণ কর্মসূচি বিকাল ৩:০০টায় সম্পন্ন হয়। এবং বিকাল ৪.০০টায় বদরী সাহাবীগণের স্মরণে রাজারকুল ঘোনার পাড়া ইসলামিয়া সুন্নিয়া মাদ্রাসার অডিটোরিয়ামে মুহাম্মদ তৈয়বুল ইসলামের সভাপতিত্বে বদর দিবসের তাৎপর্য শীর্ষক আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।

এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট কক্সবাজার জেলা শাখার সংগ্রামী সিনিয়র সহ-সভাপতি জননেতা আলহাজ্ব মাওলানা আব্দুর রশিদ হক্কানি নকশবন্দী, উদ্বোধক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যুবনেতা আবু আহসান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যুবনেতা সৈয়দ করিম শাহিন। প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কক্সবাজার জেলা ছাত্রসেনার সভাপতি ছাত্রনেতা খাজা মোহাম্মদ বাকি বিল্লাহ সাজ্জাদ।

আরো উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রসেনা রামু উপজেলা শাখার সর্বস্তরের নেতাকর্মী সহ ইসলামী ফ্রন্ট, যুবসেনা এবং ছাত্রসেনার স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে বদর দিবস সম্পর্কে বলেন, ইসলামে জিহাদ যে কেবল জয়ের জন্য যুদ্ধ কিংবা যুদ্ধ প্রস্তুতিমাত্র নয়, রক্ত ও মৃত্যুর বিভীষিকা যে জিহাদের মূল চিত্র ও চেতনা নয়; বদরের প্রান্তরে প্রার্থনার কান্না, যুদ্ধকালে রোজা রেখে ক্ষুধার্ত থাকা আর শান্তি ও সত্য প্রতিষ্ঠার প্রত্যয় ধরে রাখার মধ্য দিয়ে বদর যুদ্ধ তার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত রেখেছে।

জালিম আর মজলুমের দ্বন্দ্ব চিরন্তন। অত্যাচারীর বিরুদ্ধে অত্যাচারিতের প্রতিবাদ, নিপীড়কের বিরুদ্ধে নিপীড়িতের সংগ্রাম এক অনিবার্য বাস্তবতা। যত দিন পৃথিবী থাকবে, যত দিন মানুষ নির্যাতিত, নিপীড়িত, নিষ্পেষিত হবে, মুক্তিকামী মানুষের লড়াইও চলতে থাকবে। যুগে যুগে, দেশে দেশে নিত্যনতুন রূপে এ লড়াইকে রূপায়িত ও চিত্রিত করা হবে।

দেশ-ভাষা-অঞ্চলভেদে সে লড়াইকে নতুন নামে ডাকা হবে। এর জন্য নতুন পরিভাষা দাঁড় করানো হবে। জালিমের বিরুদ্ধে মজলুমের সে লড়াইকে কোরআন ‘জিহাদ’ বলে অভিহিত করেছে, এ বিষয়ে কোরআনের ভাষ্য হলো : ‘যুদ্ধের অনুমতি দেওয়া হলো তাদের, যারা আক্রান্ত হয়েছে। কারণ তাদের প্রতি অত্যাচার করা হয়েছে।’ (সুরা : হজ, আয়াত : ৩৯)

প্রধান বক্তা ছাত্রনেতা খাজা মোহাম্মদ বাকি বিল্লাহ বলেন, মহানবী (সা.)-এর মক্কার জীবনে কোনো যুদ্ধ পরিচালিত হয়নি। ইসলাম প্রথমে যুদ্ধ না করে সন্ধি কিংবা বিকল্প মাধ্যমে শান্তি চেয়েছে। নবীজি (সা.) ইরশাদ করেন, ‘হে লোকেরা! তোমরা শত্রুর মুখোমুখি হওয়ার প্রত্যাশা করো না। বরং আল্লাহর কাছে পরিত্রাণ চাও। এর পরও যদি শত্রুর সম্মুখীন হয়ে পড়ো, তবে ধৈর্য ধারণ করবে।’ (বুখারি : ৩/১১০১, মুসলিম : ৫/১৪৩)

প্রতিপক্ষের আক্রমণাত্মক মনোভাবের ফলে যুদ্ধ যদি অনিবার্য হয়ে পড়ে, সে ক্ষেত্রে রক্তপাত কমিয়ে আনার জন্য ইসলাম বিশেষ নির্দেশনা জারি করেছে।

সভাপতির বক্তব্যে ইসলামে যুদ্ধনীতি সম্পর্কে বলেন,
এক হাদিসে ইসলামের যুদ্ধনীতি এভাবে এসেছে : ‘তোমরা বেরিয়ে পড়ো আল্লাহর নাম নিয়ে, আল্লাহকে সঙ্গী করে, আল্লাহর রাসুলের আদর্শ ধারণ করে। অসহায় বৃদ্ধ, ছোট শিশু-কিশোর ও নারীদের হত্যা করো না। গনিমতের মাল আত্মসাৎ করো না। সেগুলো এক জায়গায় জড়ো করো। সমঝোতার চেষ্টা করো। সদ্ব্যবহার করো। নিশ্চয় আল্লাহ সদয় আচরণকারীদের ভালোবাসেন।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ২৬১৪)

যুদ্ধক্ষেত্রেও মানব হত্যার বিরুদ্ধে এমন কঠোরতা প্রদর্শনের কারণে দেখা যায়, অন্য সব ধর্ম ও সভ্যতার তুলনায় ইসলামের সমরনীতি সবচেয়ে মানবিক।

সর্বোপরি দেশ ও জাতির মঙ্গল এবং মহামারী করোনা ভাইরাস সংক্রম থেকে পরিত্রাণ কামনায় মিলাদ-কিয়াম এবং দোয়া-মোনাজাতের মধ্য দিয়ে আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিল সমাপ্ত হয়।

Related Articles

Back to top button