চকরিয়া উপজেলার হারবাং ইউনিয়ন চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগে মানববন্ধন
চকরিয়া প্রতিবেদক

গতকাল শনিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৫ টায় উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ের সামনে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা’আত, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট, যুবসেনা, ছাত্রসেনা কক্সবাজার উত্তর জেলার যৌথ উদ্যোগে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
উপজেলা পরিষদ এর সামনে আয়োজিত মানববন্ধন থেকে অভিযোগ করে মরহুম শাহ ফয়েজ আহমদ ফকির (রহঃ) র’ পুত্র শাহজাদা মাওলানা আবুল হাশেম ও বক্তরা বলেছেন, বেশ ২/৩ বছর ধরে হারবাং ইউপি চেয়ারম্যান মিরানুল ইসলাম, হারবাং শাহ্ সুফি দরবার শরীফের নিয়ন্ত্রণ হস্তান্তর করার জন্য খাদেম পরিবারকে চাপ দেন। এতে অস্বীকৃতি জানালে। এর জের ধরে ২০১৮ সালের ৪ মে চেয়ারম্যান তার বাড়িতে ডেকে নিয়ে বয়োবৃদ্ধ খাদেম শাহ ফয়েজ আহমদ ফকির ও চার পুত্রকে মারধর করেন। যাহা চকরিয়া বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ২৪৯/২০১৮ইং মামলা দায়ের হয়, যা চলমান। এই ঘটনার মারধরের কারণে দীর্ঘদিন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান শাহ ফয়েজ আহমদ ফকির।
মানববন্ধনে শাহজাদা মোহাম্মদ আবুল হাশেম অভিযোগ করেন, পিতার মৃত্যু হলে তাদেরকে আরও বেকায়দায় ফেলে দেন চেয়ারম্যান মিরানুল ইসলাম। পিতার মৃৃত্যু হলে মৃত্যু সনদ ও ওয়ারিশ সনদ প্রয়োজন পড়ে তাদের। কিন্তু কোনোভাবে এগুলো দিতে চান না চেয়ারম্যান। শেষ পর্যন্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার ধারস্থ হন অসহায় খাদেম ফয়েজ আহমদ ফকিরের পুত্রগণ। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মৃত্যু সনদ ও ওয়ারিশ সনদ দেয়ার নির্দেশ দিলেও চেয়ারম্যান দিতে গড়িমসি করেন এবং মিথ্যা আশ্রয় নেন।
সর্বশেষ গত ১২ সেপ্টেম্বর আবার পরিষদে গেলে তাদের দেখে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন চেয়ারম্যান মিরানুল ইসলাম। এক পর্যায়ে আবুল হাশেম, শাহজাহান ও সাজ্জাদ হোসেন সাকিবকে আটক করে কক্ষে ঢুকিয়ে ব্যাপক মারধর করেন। এতে তারা গুরুতর আহত হয়। পেছন থেকে আবুল হাশেম বের হয়ে উপজেলা নির্বাহি অফিসার সৈয়দ শামশুত তাবরীজ ও জাতীয় জরুরী সেবা ৯৯৯ ফোন করেন । কিছুক্ষণ পর পরিষদ থেকে মোহাম্মদ শাহজাহান ও সাজ্জাদ হোসেন সাকিবকে পরিষদ থেকে গলা ধাক্কা দিয়ে বের করে দেন।দুইটা মোবাইল সহ গুরুত্বপূর্ণ খাগগপত্র সন্ত্রাসী কায়দায় চিনিয়ে নেন। এবিষয় তাৎক্ষণিক চকরিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে একটি অভিযোগ দায়ের করেও কোন প্রতিকার না পাওয়াই, চকরিয়া বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১০২৪/২০২১ইং মামলা দায়ের করেন, যাহা পিবিআই কক্সবাজার কে তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দেন আদালত।
ইতিমধ্যে জানা যায়, মুহাম্মদ আবুল হাশেমকে স্থানীয় বন কর্মকর্তাকে বশে এনে সরকারি বনভূমি জবরদখল পূর্বক ঘর নির্মাণের মিথ্যে অভিযোগে দুইটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলাগুলোতে গঠনার তারিখ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে যথাক্রমে ১২জুন ২০১৮ এবং ৬ই জুলাই ২০১৮। জানা গেছে যে- উভয় মামলায় মোঃ আবুল হাশেম এর বিরুদ্ধে আদালত কর্তৃক গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। ভুক্তভোগী আবুল হাশেম পুলিশী গ্রেফতার এড়ানোর জন্য বর্তমানে এলাকাছাড়া। তিনি এ ব্যাপারে ন্যায় বিচার প্রত্যাশা করেছেন।
এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চেয়েছেন খাদেম শাহ ফয়েজ আহমদ ফকির (রহ.)’র পুত্রগণ ও সর্ব মহলের সচেতন নাগরিক সমাজ।
মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন জননেতা মোঃ বেলাল উদ্দিন,জননেতা আবদুল হামিদ, যুবনেতা এইচ এম রবিউল হাসান, যুবনেতা আবদুল হাকিম, যুবনেতা শিল্পী এফ এম জাকের হোসেন,শায়ের মিজানুর রহমান রেজভী, ছাত্রনেতা এন এম মোশারফ আলী, ছাত্রনেতা সরওয়ার কামাল (ছোটন), শাহজাদা মোঃ শাহাজান ও সাজ্জাদ হোসেন (সাকিব) প্রমুখ।
এছাড়াও মানববন্ধনে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা’আত, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট, যুবসেনা, ছাত্রসেনার জেলা ও উপজেলা বিভিন্ন স্তরের নেতৃবৃন্দ ও সাধারণ জনগণ উপস্থিত ছিলেন।
এসময় নেতা কর্মীরা কঠিন হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ৭২ ঘণ্টার মধ্যে চেয়ারম্যান কে আইনের আওতায় আনা না হলে কঠিন কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবো।