জুমার-খুৎবা

পবিত্র কোরআন-হাদিসের আলোকে শবে বরাত

সৈয়দ মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন আল আযহারী

জুমার খুতবা

০৭ শাবান|১৪৪৩ হিজরি|শুক্রবার|১১ মার্চ’২২ 

পবিত্র কোরআন-হাদিসের আলোকে শবে বরাত-১

যেসমস্ত বরকতময় রজনীতে আল্লাহ্ পাক তাঁর বান্দাদের প্রতি রহমতের দৃষ্টিদানে ধন্য করে থাকেন, পবিত্র শবে বরাত তারই অন্যতম। এ রাতটি শাবান মাসের চৌদ্দ তারিখ দিবাগত রাতে হবার কারণে তাফসীর, হাদিস ও বিজ্ঞ আলিমদের পরিভাষায় একে “লাইলাতুন নিসফে মিন শা’বান” বা শাবানের মধ্য রজনী নামে অভিহিত করা হয়। প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম, সলফে সালেহীন এবং বিজ্ঞ মনীষীগণ এ রাতটিকে অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে পালন করেছেন। অনুরূপভাবে যুগে যুগে মুসলমানগণও এরই ধারাবাহিকতায় এ রাতটি পালন করে আসছেন।

নামকরণ:

শবে বরাত ফার্সী শব্দ। ‘শব’ মানে রাত আর ‘বরাত’ মানে ভাগ্য, অর্থাৎ ভাগ্যরজনী। আর এ পবিত্র রাতের আরও অনেক নাম পাওয়া যায়। ১. ‘লাইলাতুল বরাত’ বা বন্টনের রাত। ২. ‘লাইলাতুল মুবারাকা’ বা বরকতময় রজনী। ৩. ‘লাইলাতুর রহমাহ’ বা করুণার রজনী। ৪. ‘লাইলাতুছ্ ছাক্ব’ বা সনদপ্রাপ্তির রাত।

হযরত আবদুল কাদের জিলানী রাহমাতুল্লাহি তা‘আলা আলায়হি এ রাতকে লাইলাতুল বরাত হিসেবে নামকরণ সম্পর্কে বলেন, কেননা এ রাতে দু’ধরনের বরাত হাছিল হয়। একটি হলোঃ হতভাগাদের আল্লাহর রহমত থেকে বঞ্চিত হওয়া, অপরটি হলোঃ আল্লাহর প্রিয়জনদের অপমান থেকে মুক্ত ও নিরাপদ থাকা।’’ (গুনিয়াতুত্ ত্বালেবীন-৫১৩)

আল্লামা জমখ্শরী রহ. বলেন, “নিশ্চয় শাবানের মধ্য রজনী’র চারটি উল্লেখযোগ্য নাম রয়েছে, আর তা হলো- ১. ‘লাইলাতুল মুবারাকা’ (বরকতময় রজনী)। ২. ‘লাইলাতুল বরায়া’ (ভাগ্য রজনী)। ৩. ‘লাইলার্তু রহমাহ্’ (করুণার রজনী) ও ৪. ‘লাইলাতুছ্ ছাক্ব’ (সনদপ্রাপ্তির রজনী)। এ রাতকে বরাত ও ছাক রাত নামে নামকরণের কারণ হিসেবে বলেন, যখন কোন ব্যক্তি তার উপর ধার্যকৃত কর পরিশোধ করেন তখন তাকে কর আদায়কারী সংস্থার পক্ষ থেকে একটি দায়মুক্তির সনদ দেয়া হয়। অনুরূপভাবে আল্লাহ্ তা’আলা তাঁর প্রিয় বান্দাদের এ রাত্রিতে জাহান্নাম থেকে মুক্তির সনদ প্রদান করে থাকেন।’’ [তাফসীর-ই কাশ্শাফ]

পবিত্র কোরআনুল করীমের আলোকে শবে বরাত :

পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেন, হা-মীম। শপথ সুস্পষ্ট কিতাবের। আমি একে (কুরআন) এক বরকতময় রাতে নাজিল করেছি। নিশ্চয়ই আমি সতর্ককারী। এ রাতে প্রত্যেক প্রজ্ঞাপূর্ণ বিষয় স্থিরকৃত হয়। আমার পক্ষ থেকে আদেশক্রমে, আমিই প্রেরণকারী। আপনার পালনকর্তার পক্ষ থেকে রহমতস্বরূপ। তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ।’ (সুরা দুখান : আয়াত ১-৬)

‘লাইলাতুল মুবারাকাহ’ (বরকতময় রজনী)’র ব্যাখ্যা ও তাফসীর :

ইমাম কুরতুবী তাঁর তাফসীরের প্রসিদ্ধ গ্রন্থে পবিত্র কোরআনের ‘সূরা দুখান’ এর ১-৩ আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেন, আয়াতে ‘লাইলাতুল মুবারাকাহ’ (বরকতময় রজনী) মানে শবে ক্বদরকে বুঝানো হয়েছে।

আবার কেউ কেউ বলেছেন, শাবানের মধ্যরজনীকে বুঝানো হয়েছে। এ রাতটির চারটি নাম উল্লেখ রয়েছে। আর তাহলো- ‘লাইলাতুল মুবারাকাহ’ ও ‘লাইলাতুছ্ ছাক’। আর এ রাতকে ‘বরকতময় রজনী’ হিসেবে নামকরণ করা হয়েছে; কেননা এ রাতে আল্লাহ্ তা‘আলা তাঁর বান্দাদের উপর অগণিত বরকত, কল্যাণ ও পুণ্য অবতীর্ণ করে থাকেন।

এ রাতেই পবিত্র কোরআন একই সাথে সম্পূর্ণরূপে অবতীর্ণ হয় এবং পরবর্তীতে ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ধাপে ধাপে ২৩ বছর জুড়ে অবতীর্ণ হয়। আবার কেউ কেউ বলেন, কোরআন অবতীর্ণ হওয়া আরম্ভ হয় শবে বরাতে। হযরত ইকরামা রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু বলেন, লাইলাতুল মুবারাকাহ্ মানে এখানে ‘শবে বরাত’কে বুঝানো হয়েছে। এটি হলো শাবানের মধ্য রজনী (শবে বরাত) আগত বছরের বিষয়াদি সিদ্ধান্ত নেয়া হয়, কারা জীবিত থাকবে এবং কারা মারা যাবে, কারা এ বছর হজ্ব করবে তা লিপিবদ্ধ করা হয়। ফলে এতে কেউ কোনরূপ পরিবর্তন বা পরিবর্ধন করতে পারে না।

রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন, শাবান থেকে শাবানের জন্য মানুষের আয়ু নির্ধারণ করা হয়, এমনি মানুষ বিবাহ্ করছে এবং তার সন্তান জন্মলাভ করছে অথচ তার নাম মৃতদের কাতারে লিপিবদ্ধ করা হয়েছে।

‘আল্ আরুস’ নামক কিতাবের লেখক এ সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন যে, যে রাতে সবকিছু বন্টন করা হয় তা হলো শাবানের মধ্য রজনী বা শবে বরাত। এজন্য এটাকে বরাত রজনী বলা হয়।

আল্লামা জমখ্শরী বলেন- ‘লওহে মাহ্ফুয’-এ লিপিবদ্ধকরণ শুরু হয় শবে বরাতে এবং তার পরিসমাপ্তি ঘটে শবে ক্বদরে। অতঃপর রিয্কের কপি দেয়া হয় হযরত মিকাঈল আলাইহিস্ সালামকে, যুদ্ধের কপি হযরত জিব্রাঈল আলায়হিস্ সালামকে, অনুরূপভাবে ভূমিকম্প, বজ্রপাত ও ভূমিধ্বস বিষয়ক কপিও। আমলনামার কপি প্রথম আসমানের মহান ফিরিশতা হযরত ইসমাঈলকে এবং বিপদাপদের কপি হযরত আযরাঈল তথা মালাকুল মাওতকে সোপর্দ করা হয়। (তাফসীরে কুরতুবী)

ইমাম বগবী রহ. এ আয়াতের তাফসীরে বলেন: ইমাম ক্বাতাদাহ্ এবং ইবনে যায়েদ বলেন, এটি হলো ক্বদরের রাত। আল্লাহ্ তা‘আলা তাঁর নিকট সংরক্ষিত উ¤মূল কিতাব (মূল কিতাব) থেকে ক্বদরের রাতে পৃথিবীর আকাশে কোরআন নাযিল করেন। অতঃপর হযরত জিব্রাঈল বিশ বছর কাল যাবৎ ধরে ধাপে ধাপে তা প্রিয় নবীর নিকট নিয়ে আসেন। আবার অন্যরা বলেছেন- এটি হলো ‘শাবানের মধ্য রজনী’।

হযরত ইবনে আব্বাস রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহুমা বর্ণনা করেন, আল্লাহ্ তা‘আলা নানা বিষয়ে ফয়সালা প্রদান করেন শাবানের মধ্য রজনীতে এবং তা এ বিষয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত ফিরিশতাদের নিকট সোপর্দ করেন ক্বদরের রাতে। (তাফসীরে বগবী -২২৫-২২৭)

হাদীস শরীফের আলোকে শবে বরাত: পবিত্র শাবান মাস এবং এ মাসে রোযা পালনের বিষয়ে বোখারী, মুসলিম ও তিরমিযীসহ অনেক বিশুদ্ধ হাদিসগ্রন্থের বর্ণনা আমরা লক্ষ্য করেছি। অনুরূপভাবে এ মাসের চৌদ্দ তারিখ দিবাগত রাত তথা শবে বরাত সম্পর্কে ছেহাহ্ ছিত্তাহ’র উল্লেখযোগ্য কিতাবাদিসহ নানা নির্ভরযোগ্য গ্রন্থে প্রমাণ পাওয়া যায়। যেমন-

১. হযরত মুয়ায রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু থেকে বর্ণিত, ‘যখন শাবানের মধ্য রজনী (শবে বরাত) উপস্থিত হয় তখন এক আহবানকারী এ আহবান করতে থাকে, “কোনও ক্ষমা প্রার্থনাকারী আছো কি? আমি তাকে ক্ষমা করবো। কোন প্রার্থী বা ফরিয়াদী আছো কি? আমি তার প্রার্থনা ও ফরিয়াদ কবুল করব। ফলে যে যা প্রার্থনা করবে তাকে তা দেয়া হবে। একমাত্র যেনাকারী ও মুশরিক ব্যতিরেকে। (ছহীহ্ ইবনুল হিব্বান)

২. হযরত আলী রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন- যখন শাবানের মধ্য রজনী উপস্থিত হবে, তখন তোমরা এ রাতটিকে (ইবাদতের মাধ্যমে) উদ্যাপন কর এবং আগত দিনটিকে রোযার মাধ্যমে। কেননা আল্লাহ্ তা‘আলা ওই রাতের সূর্যাস্তের পরক্ষণ থেকেই পৃথিবীবাসীর প্রতি বিশেষ করুণার দৃষ্টি প্রদান করেন এবং এ ঘোষণা দেন- আছ কি কেউ ক্ষমা চাওয়ার? আমি তাকে ক্ষমা করবো। আছ কি কেউ রিযিক প্রার্থনা করার? আমি তাকে রিযিক দ্বারা ধন্য করবো। আছ কি কেউ অসুস্থ? আমি তাকে আরোগ্য দান করবো। আছ কি এমন কেউ? আছ কি এমন কেউ? সুবহে সাদেক উদিত হওয়া পর্যন্ত এভাবে বলা হবে। (সুনানে ইবন মাযা, হা-১৩৮৮, ১৩৯০)

৩. হযরত আয়েশা সিদ্দীক্বা রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহা থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, ‘এক রজনীতে আমি প্রিয়নবীকে বিছানায় খুঁজে পাচ্ছিলাম না। ফলে তাঁকে খোঁজার জন্য ঘর থেকে বের হয়ে পড়লাম। হঠাৎ দেখি তিনি জান্নাতুল বক্বীতে আসমানের দিকে দু’হাত তুলে দোয়া করছেন। আমাকে দেখে তিনি বললেন, তুমি কি এ ভয় করছো যে, আল্লাহ ও তাঁর রাসূল তোমার প্রতি অন্যায় করবেন? আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ্! আমি ভেবেছিলাম আপনি হয়তো আপনার অন্য কোন স্ত্রীর গৃহে প্রবেশ করেছেন। তখন তিনি বললেন, নিশ্চয় আল্লাহ্ তা‘আলা শাবানের মধ্য রজনীতে প্রথমাকাশের দিকে বিশেষ কৃপাদৃষ্টি দান করেন এবং ’কলব’ গোত্রের ছাগলের পশমেরও অধিক পরিমাণ গুনাহগারকে ক্ষমা করেন।(তিরমিযী শরীফ:হা-৭৩৯)

৪. হযরত আবু মুসা আশয়ারী থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন, নিশ্চয় আল্লাহ্ তা‘আলা শাবানের মধ্য রজনীতে রহমত ভরা দৃষ্টিতে গুনাহগারদের দিকে তাকান। ফলে সকল সৃষ্টিকে ক্ষমা করে দেন, একমাত্র মুশরিক ও অন্য মুসলমান ভাইয়ের প্রতি বিদ্বেষ পোষণকারী ব্যতিরেকে। (সুনান ইবন মাযা, হা: ৪৪৪-৪৪৫)

৫. হযরত আব্দুল্লাহ বিন আমর বিন আছ রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহুমা থেকে বর্ণিত। প্রিয় নবী এরশাদ করেন, সাবানের মধ্য রজনীতে আল্লাহ্ তা‘আলা তাঁর সৃষ্টির প্রতি বিশেষ করুণার দৃষ্টি প্রদান করেন এবং সকল বান্দাকে ক্ষমা করে দেন; কিন্তু দুই শ্রেণীর মানুষকে নয়; বিদ্বেষ পোষণকারী ও আত্মহত্যাকারী। (মুসনাদ আহমদ-৬৬০৪)

৬. হযরত আবু বকর সিদ্দীক্ব রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন: আল্লাহ্ তা‘আলা যখন শাবানের মধ্য রজনী উপস্থিত হয় তখন পৃথিবীর আকাশে রহমতের দৃষ্টি নিবদ্ধ করেন এবং সকল শ্রেণীর বান্দাদের ক্ষমা করেন, একমাত্র মুশরিক ও মুসলমান ভাইয়ের প্রতি বিদ্বেষপোষণকারীকে ছাড়া। (মুসনাদে বায্যার: ১৫৮, হা-৮০)

৭. কা’ব র. থেকে বর্ণিত: তিনি বলেন, আল্লাহ্ তা‘আলা শাবানের মধ্য রজনীতে জিব্রাঈল আলায়হিস্ সালামকে বেহেশতের প্রতি এ নির্দেশ দিয়ে পাঠান যে, বেহেশত যেন নিজেকে নানা সাজে সজ্জিত করে এবং জিব্রাঈল যেন বেহেশতকে উদ্দেশ্য করে এ সুসংবাদ শুনায়: নিশ্চয় আল্লাহ্ এ রাত্রিতে মুক্ত করে দিয়েছেন আকাশের তারকারাজির সমপরিমাণ, পৃথিবীর রাত-দিনের সংখ্যা পরিমাণ, বৃক্ষের পত্র-পল্লবের সমপরিমাণ, পাহাড়সমূহের ওজনের সমপরিমাণ এবং বালুরাশির সমপরিমাণ অসংখ্য অগণিত মানুষকে। ( ইবন রজব হাম্বলী: লাতায়েফুল মা’রেফ-১৩৮)

৮. হযরত আতা ইবনে ইয়াসার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, ‘শাবানের মধ্য রজনীতে আয়ূ নির্ধারণ করা হয়। ফলে দেখা যায় কেউ সফরে বের হয়েছে অথচ তার নাম মৃতদের তালিকায় লিপিবদ্ধ করা হয়ে গেছে। আবার কেউ বিয়ে করছে অথচ তার নাম জীবিতের খাতা থেকে মৃতের খাতায় লিখা হয়ে গেছে। (মুসনদ আল বাযযার: হা-৭৯২৫)

৯. হযরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহুমা থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন- পাঁচটি রজনীতে দোয়া প্রত্যাখ্যাত হয় নাঃ জুমার রাত, রজব মাসের প্রথম রাত, শাবানের মধ্য রজনী এবং দুই ঈদের রাত। (মুসনদ আল বাযযার: হা-৭৯২৭)

১০. হযরত মুয়ায ইবনে জবল রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন, ‘আল্লাহ তা‘আলা শাবানের মধ্য রজনীতে স্বীয় সৃষ্টির প্রতি বিশেষ করুণার দ্বার উন্মুক্ত করে দেন এবং সকল সৃষ্টিকে ক্ষমা করে দেন এবং শুধু মাত্র মুশরিক ও বিদ্বেষীকে ছাড়া। (মু’জাম আল কাবীর, হা-৬৭৭২)

১১. আবু ছা’লাবাহ্ থেকে বর্ণিত। প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন, আল্লাহ স্বীয় বান্দাদের প্রতি শাবানের মধ্য রজনীতে করুণাাভরা হৃদয়ে ক্ষমার দৃষ্টিতে তাকান, ফলে মুমিনদের ক্ষমা করে দেন এবং কাফিরদেরকে ইমান আনার সুযোগ দেন আর হিংসুকদেরকে তাদের হিংসার মাঝে ছেড়ে দেন, যতক্ষণ না তারা তাদের হিংসা-বিদ্বেষ ত্যাগ করে। (মু’জাম আল কাবীর: ৫৯০, হা-২২৩)

১২. হযরত আবু বকর সিদ্দিক্ব রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন- নিশ্চয় আল্লাহ্ তা‘আলা শবে বরাতে পৃথিবীর আকাশে রহমত অবতীর্ণ করেন এবং পৃথিবীর সকল মানুষকে ক্ষমা করে দেন। একমাত্র কাফির এবং যার অন্তরে বিদ্বেষ বিদ্যমান সে ছাড়া। (শরহু উসূলি ই’তিকাদি আহলিস সুন্নাহ, হা-৭৫০) (চলবে, ইন শা আল্লাহ)

লেখক: বিভাগীয় প্রধান, ইসলামিক স্টাডিজ, সাদার্ন বিশ্ববিদ্যালয়, খতীব, মুসাফিরখানা জামে মসজিদ।