জুমার-খুৎবা

রামাদ্বানের শেষ দশক, পবিত্র লাইলাতুল ক্বদর, ঈদ ও সাদকাতুল ফিতর

সৈয়দ আল্লামা মুহাম্মদ জালাল উদ্দিন আযহারী

জুমার খুতবা

 

بسم الله الرحمن الرحيم

 

 

সুপ্রিয় পাঠক ভাই ও বোনেরা, আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, দেখতে দেখতে মাহে রামাযান আমাদের মাঝ থেকে বিদায় নিতে শুরু করেছে। আমরা এসে পৌঁছেছি শেষ দশকে। কিন্তু কল্যাণের বর্ষণ এখনো শেষ হয়ে যায়নি। বন্ধ হয়ে যায়নি তওবার দরজা বরং আরও বেশি সুযোগ নিয়ে মাহে রমযানের শেষ দশক আমাদের মাঝে সমাগত।

রামাযানের শেষ দশকে প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম স্ত্রী-পরিবার সহ সারা রাত জেগে ইবাদত করতেন: উম্মুল মুমিনীন হযরত আয়েশা সিদ্দীক্বা রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহা হতে বর্ণিত, তিনি বলেন:

عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا قَالَتْ : ” كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا دَخَلَ الْعَشْرُ أَحْيَا اللَّيْلَ وَأَيْقَظَ أَهْلَهُ وَجَدَّ وَشَدَّ الْمِئْزَرَ-
) رواه البخاري (২০২৪) ومسلم ১১৭৪

“রামাযানের শেষ দশক প্রবেশ করলে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কোমর বেঁধে নিতেন, নিজে সারা রাত জাগতেন এবং পরিবারকেও জাগাতেন।” (কোমর বাঁধার অর্থ হল: পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়ে চেষ্টা-সাধনায় লিপ্ত হওয়া।) (বুখারী-২০২৪, মুসলিম-১১৭৪)

قَالَتْ عَائِشَة رضي الله عنها: كَانَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى الله عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَجْتَهِدُ فِي الْعَشْرِ الأَوَاخِرِ مَا لاَ يَجْتَهِدُ فِي غَيْرِهِ. )مسلم، (১১৭৫)

উম্মুল মুমিনীন হযরত আয়েশা সিদ্দীক্বা রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহা হতে বর্ণিত, তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রামাযানের শেষ দশকে (ইবাদত-বন্দেগীতে) যে পরিমাণ পরিশ্রম করতেন অন্য কোন সময় করতেন না।” (মুসলিম-১১৭৫)

عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا قَالَ : ” كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَعْتَكِفُ الْعَشْرَ الأَوَاخِرَ مِنْ رَمَضَانَ ” رواه البخاري (২০২৫) ومسلم (১১৭১)

وعن عائشة رضي الله عنها: أن رسول الله – صلى الله عليه وسلم – قال: تحرَّوا ليلة القدر في الوتر من العشر الأواخر من رمضان، وفي لفظ: تحرَّوا ليلة القدر في العشر الأواخر من رمضان ( البخاري، (২০১৭)، و(২০২০)

عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُجَاوِرُ فِي الْعَشْرِ الْأَوَاخِرِ مِنْ رَمَضَانَ وَيَقُولُ تَحَرَّوْا لَيْلَةَ الْقَدْرِ فِي الْعَشْرِ الْأَوَاخِرِ مِنْ رَمَضَانَ (صحيح البخاري كتاب فضل ليلة القدر باب تحري ليلة القدر في الوتر من العشر الأواخر, رقم الحديث-১৯১৬)

উম্মুল মুমিনীন হযরত আয়েশা সিদ্দীক্বা রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহা হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমযানের শেষ দশ দিন এতেকাফ করতেন এবং বলতেন, তোমরা রমযানের শেষ দশ রাতে শবে ক্বদর সন্ধান কর। (বুখারী-২০১৭ ও মুসলিম-১১৭১)

পবিত্র লাইলাতুল ক্বদরঃ

‘লাইলাহ’ শব্দের অর্থ হচ্ছে রাত বা রজনী। আর ‘ক্বদর’ শব্দের অর্থ হলো মহিমা, মহাত্ম বা সম্মান, এই মহাত্ম ও সম্মানের কারণে একে লাইলাতুল ক্বদর, তথা মহিমান্বিত রাত বলা হয়। যা হাজার মাস (৮৩ বছর ৪ মাস) অপেক্ষা উত্তম। এ রাতটি আমাদের এ উপমহাদেশে ‘শবে ক্বদর’ হিসেবে মশহুর।

কদরের অর্থ: নির্ধারণ করা, সময় নির্দিষ্ট করা ও সিদ্ধান্ত করা। অর্থাৎ লায়লাতুল কদর এমন এক রাত যে রাতে আল্লাহ প্রত্যেক বস্তুর সঠিক পরিমাণ নির্ধারণ করেন। তার সময় নির্দিষ্ট করেন এবং হুকুম নাযিল করেন ও প্রত্যেক বস্তুর ভাগ্য নির্ধারণ করেন। মহান আল্লাহ আরও বলেন-
فِيهَا يُفْرَقُ كُلُّ أَمْرٍ حَكِيمٍ
“ঐ রাতে সকল বিষয়ের সুষ্ঠু ও দৃঢ় সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হয় আমার নির্দেশক্রমে”-(সূরা দুখান, আয়াত-৪)

ক্বদরের রাত্রের ফযিলত ও মহাত্ম সম্পর্কে কুরআনুল করিমে সূরাতুল ক্বদর নামে একটি পূর্ণাঙ্গ সূরা নাযিল হয়েছে। আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন ইরশাদ ফরমান:

إِنَّا أَنْزَلْنَاهُ فِي لَيْلَةِ الْقَدْرِ * وَمَا أَدْرَاكَ مَا لَيْلَةُ الْقَدْرِ * لَيْلَةُ الْقَدْرِ خَيْرٌ مِنْ أَلْفِ شَهْرٍ * تَنَزَّلُ الْمَلَائِكَةُ وَالرُّوحُ فِيهَا بِإِذْنِ رَبِّهِمْ مِنْ كُلِّ أَمْرٍ * سَلَامٌ هِيَ حَتَّى مَطْلَعِ الْفَجْرِ

(১) নিশ্চয়ই আমি একে (পবিত্র কুরআনকে) নাযিল করেছি শবে ক্বদরে। (২) শবে ক্বদর সম্বন্ধে আপনি কি জানেন? (৩) শবে ক্বদর হল এক হাজার মাস অপেক্ষা উত্তম। (৪) এই রাত্রিতে প্রত্যেক কাজের জন্যে ফেরেশতাগণ ও রূহ অবতীর্ণ হয় তাদের পালনকর্তার নির্দেশক্রমে। (৫) এটা নিরাপত্তা যা ফজরের উদয় পযর্ন্ত অব্যাহত থাকে। (সুরা ক্বদর)

 

 

শবে ক্বদরের ফযিলত ও মহাত্ম সম্পর্কে কুরআন পাকের এই বর্ণনাই যথেষ্ট।

প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেন:
” مَنْ قَامَ لَيْلَةَ الْقَدْرِ إِيمَانًا وَاحْتِسَابًا غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ –
” যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে ও সওয়াব হাসিলের উদ্দেশ্যে ক্বদরের রাতে ইবাদত করে তার অতীতের সমস্ত গুনাহ মাফ করে দেয়া হয়। (বুখারী-৩৫ ও মুসলিম-৭৬০)

 

 

عَنْ يَحْيَى بْنِ أَبِي كَثِيرٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا أَبُو سَلَمَةَ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، أَنَّ أَبَا هُرَيْرَةَ، حَدَّثَهُمْ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: مَنْ صَامَ رَمَضَانَ إِيمَانًا وَاحْتِسَابًا، غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ، وَمَنْ قَامَ لَيْلَةَ الْقَدْرِ إِيمَانًا وَاحْتِسَابًا، غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ

صحيح البخاري – الإيمان (৩৫) صحيح البخاري – الإيمان (৩৭) صحيح البخاري – الإيمان (৩৮) صحيح البخاري – (৪৬৩৬) صحيح البخاري – (৪৬৪০) صحيح البخاري – (২০০৯) صحيح البخاري – (৪৩৮৩) صحيح مسلم – صلاة المسافرين وقصرها (৭৬০) صحيح مسلم – صلاة المسافرين وقصرها (৭৬০) سنن الترمذي – الصوم (৬৮৩) سنن الترمذي – الصوم (৮০৮) سنن النسائي – قيام الليل وتطوع النهار (১৬০২) سنن النسائي – قيام الليل وتطوع النهار (১৬০৩) سنن النسائي – الصيام (২১৯৪) سنن النسائي – الصيام (২১৯৬) سنن النسائي – الصيام (২১৯৭) سنن النسائي – الصيام (২১৯৮) سنن النسائي – الصيام (২১৯৯) سنن النسائي – الصيام (২২০০)

প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরও এরশাদ করেন:

عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ ، قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : ” إِذَا كَانَ لَيْلَةُ الْقَدْرِ نزل جِبْرِيلُ عَلَيْهِ السَّلامُ فِي كَبْكَبَةٍ مِنَ الْمَلائِكَةِ يُصَلُّونَ عَلَى كُلِّ عَبْدٍ قَائِمٍ أَوْ قَاعِدٍ يَذْكُرُ اللَّهَ
( فضائل الأوقات للبيهقي بَابٌ فِي فَضْلِ الْعِيدِ رقم الحديث: ১৪৬)
যখন লাইলাতুল কদর আসে, তখন জিবরাঈল অন্যান্য ফেরেশতাগণের সাথে যমীনে নেমে আসেন এবং প্রত্যেক ঐ বান্দাহর জন্যে রহমত ও মাগফেরাতের দোয়া করেন যে দাঁড়িয়ে- বসে আল্লাহর ইবাদাতে মশগুল থাকে। (বায়হাকী: ফাদায়েলুল আওকাত-১৪৬)

প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেন:

عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ ، قَالَ : دَخَلَ رَمَضَانُ ، فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : ” إِنَّ هَذَا الشَّهْرَ قَدْ حَضَرَكُمْ وَفِيهِ لَيْلَةٌ خَيْرٌ مِنْ أَلْفِ شَهْرٍ ، مَنْ حُرِمَهَا فَقَدْ حُرِمَ الْخَيْرَ كُلَّهُ ، وَلَا يُحْرَمُ خَيْرَهَا إِلَّا مَحْرُومٌ ” .-
( سنن ابن ماجه كِتَاب الصِّيَامِ بَاب مَا جَاءَ فِي فَضْلِ شَهْرِ رَمَضَانَ رقم الحديث: ১৬৩৪)

 

 

লোক সকল! তোমাদের মধ্যে এমন এক রাত এসেছে যা হাজার মাস থেকেও উত্তম। যে ব্যক্তি এ রাত থেকে বঞ্চিত রইলো সে সকল প্রকার কল্যাণ থেকে বঞ্চিত রয়ে গেল এবং এ রাত থেকে সে-ই বঞ্চিত থাকে যে প্রকৃতপক্ষে বঞ্চিত।–(ইবনে মাজাহ-১৬৩৪)

লাইলাতুল কদর নির্ধারণ:

عن عائشةَ رضِيَ اللهُ عنها أنَّ رسولَ الله صلَّى الله عليه وسلَّمَ قال: تَحرُّوا لَيلةَ القَدْرِ في الوَتْر من العَشرِ الأواخِرِ من رمضانَ) رواه البخاريُّ (২০১৭)

উম্মুল মুমিনীন হযরত আয়েশা সিদ্দীক্বা রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহা বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, তোমরা শবে ক্বদর তালাশ কর। রমযানের শেষ দশকের বে-জোড় রাত্রিতে। (বুখারী-২০১৭)

সাহাবীদের মধ্যে অনেককেই স্বপ্ন দেখান হল, শবে ক্বদর (রমযানের) শেষ সাত রাতের মধ্যে। প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেন:

عن ابن عُمرَ رضِيَ اللهُ عنهُما، أنَّ رِجالًا من أصحاب النبيِّ صلَّى الله عليه وسلَّمَ أُرُوا ليلةَ القَدْر في المنامِ في السَّبع الأواخِر، فقال رسولُ الله صلَّى الله عليه وسلَّمَ: أَرَى رُؤياكم قد تَواطأتْ في السَّبع الأواخِر؛ فمَن كان مُتحرِّيَها، فلْيَتحرَّها في السَّبع الأواخِر)) رواه البخاريُّ (২০১৫)، ومسلم (১১৬৫)

“আমি দেখছি, তোমাদের সবার স্বপ্ন একি রকম- শেষ ৭ রাতেই সীমাবদ্ধ। তাই যে তা অনুসন্ধান করে, সে যেন শেষ ৭ রাতে তা খোঁজ করে দেখে। (বুখারী-২০১৫ ও মুসলীম-১১৬৫)

প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেন:

عنِ ابْنِ عَبَّاس رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا:أن النبي – صلى الله عليه وسلم – قَالَ: ” التَمِسُوهَا في العَشْرِ الأوَاخِرِ مِنْ رَمَضَانَ، لَيْلَةَ الْقَدْرِ في تَاسِعَةٍ، تبقى في سَابِعَةٍ تَبْقَى، في خَامِسَةٍ تَبْقَى)
“.صحيح البخاري – (৩৫০৫) صحيح البخاري – (২১২৯) سنن أبي داود – الصلاة (১৩৮১) مسند أحمد – من مسند بني هاشم (১/২৭৯) مسند أحمد – من مسند بني هاشم (১/৩৬০)

“তোমরা তালাশ করবে তাকে রমযানের শেষ দশে- মাসের নয় দিন বাকি থাকতে, সাতদিন বাকি থাকতে, পাঁচ দিন বাকি থাকতে। (বুখারী-৩৫০৫)

উল্লেখিত হাদীসগুলো থেকে জানা যায় যে, রমযান মাসের শেষ দশ দিনের বেজোড় রাত গুলোর মধ্যে কোনো একটি অর্থাৎ ২১শে, ২৩শে, ২৫শে, ২৭শে, অথবা ২৯শে রাত।

ইমামে আ’যম আবূ হানীফা রাহমাতুল্লাহি আলাইহি সহ অসংখ্য ইমামদের মত হলো:

অধিকতর সম্ভাবনার দিক দিয়ে রমযান মাসের সাতাশ তারিখ। তবে সুন্নত হলো পবিত্র রমাদ্বান শরীফ-এর শেষ দশকের প্রত্যেক বেজোড় রাতেই শবে ক্বদর তালাশ করা। আলাহ রাব্বুল আলামিন এ রাতকে গোপন রেখেছেন আমাদের উপর রহম করে। তিনি দেখতে চান এর বরকত ও ফযিলত লাভের জন্য কে কত প্রচেষ্টা চালাতে পারে।

মহিমান্বিত রজনীর নিদর্শনসমূহঃ

১. কদরের রাত্রি তিমিরাচ্ছন্ন হবে না।
২. নাতিশীতোষ্ণ হবে। (না গরম না শীত এমন)
৩. মৃদু বায়ু প্রবাহিত হবে।
৪. উক্ত রাতে মু’মিনগণ ইবাদত করে অন্যান্য রাত অপেক্ষা অধিক তৃপ্তি বোধ করবে।
৫. হয়তো বা আল্লাহ তা’আলা কোন ঈমানদার ব্যক্তিকে তা স্বপ্নে দেখাবেন। (দেখুনঃ ইবনে খুযায়মা, ইবনে হিব্বান, মুসনাদে আহমদ)
৬. ঐ রাতে বৃষ্টি বর্ষণ হতে পারে। (বুখারী)
৭. সকালে হালকা আলোক রশ্নিসহ সূর্যোদয় হবে, পূর্ণিমার চাঁদের ন্যায়। (মুসলিম)

অবশ্য এ আলামতটি কদরের রাত অতিক্রান্ত হওয়ার পর সকাল বেলায় জানা যাবে। এর হেকমত হল লায়লাতুল কদর অনুসন্ধানে বান্দাদেরকে অধিক পরিশ্রমী করে তোলা, এবং যারা এ রাতের ফযীলত পাওয়ার জন্য পরিশ্রম করেছে তাদেরকে আনন্দিত করা।

কদরের রাতের দুআ:

عن عائشةَ رضِيَ اللهُ عنها قالت: قلتُ: يا رسولَ الله، أرأيتَ إنْ علمتُ أيَّ ليلةٍ ليلةُ القدْر؛ ما أقول فيها؟ قال: قولي: اللَّهُمَّ إنَّك عفُوٌّ تحبُّ العفوَ، فاعفُ عنِّي- رواه الترمذي (৩৫১৩)، وابن ماجه (৩১১৯)، وأحمد (৬/১৭১) (২৫৪২৩) قال الترمذي: حسن صحيح، وصحَّح إسنادَه النوويُّ في ((الأذكار)) (২৪৭)، وصحَّح الحديثَ ابن ُالقيِّم في ((أعلام الموقعين)) (৪/২৪৯)،

উম্মুল মুমিনীন আয়েশা সিদ্দীক্বা রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহা হতে বর্ণিত, তিনি বলেন: আমি আরয করলাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমি যদি ক্বদরের রাত খুঁজে পাই, তাহলে আমি ওই রাতে কী বলবো? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জবাব দিলেন, তুমি বলবে- “আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুব্বুন তুহিব্বুল আফওয়া ফা’ফু আন্নী” অর্থ: হে আল্লাহ তুমি অবশ্যই ক্ষমাশীল, তুমি ক্ষমা পছন্দ করো, তাই আমাকে ক্ষমা করো। (তিরমিযী-৩৫১৩, ইবনু মাজা-৩১১৯)

শবে ক্বদর দুআ কবুলের অন্যতম রাত্রি। এই রাত্রিতে বান্দা আল্লাহর কাছে যা আরজি করে আল্লাহ পাক তাকে তাই দিয়ে থাকেন প্রয়োজন অনুসারে। বান্দার সকল দুয়াই এ রাত্রিতে আল্লাহ পাক কবুল করে থাকেন। কেননা আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন:

وَقَالَ رَبُّكُمُ ادْعُونِي أَسْتَجِبْ لَكُمْ ۚ إِنَّ الَّذِينَ يَسْتَكْبِرُونَ عَنْ عِبَادَتِي سَيَدْخُلُونَ جَهَنَّمَ دَاخِرِينَ
“তোমরা আমার নিকট দুআ করো আমি তোমাদের দুআ কবুল করবো।”(সূরা গাফের, আয়াত-৬০)

তাই প্রত্যেক মুসলমান নর-নারীর দায়িত্ব-কর্তব্য হচ্ছে, রমাদ্বান শরীফ-এর শেষ দশ দিনের প্রতি বিজোড় রাত্রিতে জাগ্রত থেকে লাইলাতুল ক্বদর বা শবে ক্বদর তালাশ করা। রাত্রিতে জাগ্রত থেকে বেশি বেশি তওবা ইস্তিগফার করে, ইবাদত-বন্দেগীতে কাটানো এবং সকল মুসলমানের জন্য দু’আ করা। যার মনে যতো আরজি রয়েছে তা আল্লাহর দরবারে পেশ করা। কেননা হাদীছ শরীফ-এ রয়েছে,

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ :”مَنْ لَمْ يَسْأَلْ اللَّهَ يَغْضَبْ عَلَيْهِ
)رواه الترمذي ৩২৯৫ وأحمد ৯৩২৪ وصححه الألباني في صحيح الجامع ৪১৮৩

“যে ব্যক্তি আল্লাহর নিকট চায় না বা দু’আ করেনা আল্লাহ পাক তার উপর অসন্তুষ্ট হন।” (তিরমিযী-৩২৯৫)

কাজেই সকলের উচিত আল্লাহ পাক এবং তাঁর হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সন্তুষ্টির জন্য, ইসলামের উপর, ঈমানের উপর ইস্তিক্বামত তথা অটল থাকার জন্য, দুনিয়া এবং আখিরাতের সবর্প্রকার কল্যাণের জন্য অন্তর থেকে দু’আ করা। অবশ্যই আল্লাহ পাক তাকে এই মহিমান্বিত রাত্রির সম্মানার্থে তা দান করবেনই করবেন। এটা আল্লাহর ওয়াদা।

লাইলাতুল ক্বদর-এর নামায:

লাইলাতুল ক্বদর-এ সুনির্দিষ্ট কোন নামায নেই, লাইলাতুল ক্বদর-এ সুন্নত-নফল অনেক নামায ও আমলই করা যায়। তবে বিশেষভাবে কয়েকটি আমল করা উচিত। তা হলো: লাইলাতুল ক্বদর-এর নিয়তে ৪/৬/৮/১২ রাকাআত নামায পড়া। দুরূদ শরীফ পাঠ করা। ছলাতুত তাসবীহ’ আদায় করা। যিকির-আযকার করা। কুরআন শরীফ তিলাওয়াত করা। তাহাজ্জুদের নামায পড়া। বেশি বেশি তওবা ইস্তিগফার এবং মুনাজাত করা। আল্লাহ পাকর কাছে কান্নাকাটি করা। মীলাদ শরীফ পাঠ করত: দু’আ-মুনাজাত করা, ইত্যাদি।

ঈদঃ

ঈদ আরবি শব্দ, যার অর্থ-খুশি, আরেক অর্থে ফিরে আসা। এমন দিনকে ঈদ বলা হয় যে দিন মানুষ একত্র হয় ও দিনটি বারবার ফিরে আসে। আল্লাহ রাববুল আলামিন এ দিবসে তাঁর বান্দাদেরকে নিয়ামাত ও অনুগ্রহ দ্বারা বারবার ধন্য করেন ও বারবার তাঁর ইহসানের দৃষ্টি দান করেন।

ঈদের দিনে যে সব কারণে বিশ্ব মুসলিমের হৃদয় খুশিতে ভরে ওঠে, তা হল -ঈদুল ফিতরে সুদীর্ঘ একমাস সিয়াম সাধনার মাধ্যমে আল্লাহ তা’আলার মহান আদেশ পালন করে সৌভাগ্য লাভ করে সওয়াবের আশায় আশান্বিত হয়ে ও সদকাতুল ফিতর প্রদান করে সৃষ্টিকর্তার সন্তুষ্টি অর্জনের অভিপ্রায়ে হৃদয় খুশির আনন্দে ভরে ওঠে।

ইসলামে ঈদের প্রচলন:

আল্লাহ রাব্বুল আলামিন মুসলিম উম্মাহর প্রতি নিয়ামাত হিসেবে ঈদ দান করেছেন। হাদীসে এসেছে, রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদিনায় আগমন করে দেখলেন ইহুদিরা দুটি দিন খেলা-ধুলা ও আনন্দ ফুর্তি করছে। তিনি জিজ্ঞেস করলেন: এ দিন দুটো কি? তারা বললেন: আমরা জাহিলী (মুর্খতার) যুগে এ দু’দিন আনন্দ-ফুর্তি করতাম। এ কথা শুনে রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদেরকে বললেন, আল্লাহ তা’আলা তোমাদেরকে এ দু’টি উৎসবের পরিবর্তে অধিক উত্তম ও কল্যাণকর দু’টি আনন্দ উৎসবের দিন দান করেছেন, তা হলো ঈদুল আজহা ও ঈদুল ফিতরের দিন । (আবু দাউদ, নাসায়ী)

ঈদের ফযীলত:

বছরে পাঁচ রাতে দোয়া বিশেষভাবে কবুল হয়। তার মধ্যে দু’ঈদের দু’রাত। এ রাতে জাগ্রত থেকে ইবাদত-বন্দেগী, তাসবীহ পাঠ, কুরআন শরীফ তিলাওয়াত, দুরূদ শরীফ ও যিকির-আযকার করে রাত অতিবাহিত করা অতি উত্তম। হাদীছ শরীফে রয়েছে, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: “যে ব্যক্তি ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহার রাতে জাগ্রত থেকে ইবাদতে মশগুল থাকবে, যেদিন অন্য সমস্ত দিল মরবে, সেদিন তার দিল মরবে না।” এর অর্থ হলো- ক্বিয়ামতের দিন অন্যান্য দিল পেরেশানীতে থাকলেও দু’ঈদের রাতে জাগরণকারী ব্যক্তির দিল শান্তিতে থাকবে। (তবারানী শরীফ)

নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “যে ব্যক্তি দুই ঈদের রাতে জাগ্রত থেকে ইবাদত করবে,সে ব্যক্তি কিয়ামতের দিন ভয়ংকর আতংক ভাব থেকে বেঁচে থাকবে।”

অন্য এক হাদীস শরীফে আছে, রাসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, “ঈদের রাতে উম্মতে মুহাম্মদীকে ক্ষমা করা হয়। কারণ, কর্মচারীদেরকে কাজ থেকে ফারিগ হওয়ার পর ভাতা দেয়া হয়।”

ঈদুল ফিতরের দিন করণীয় কাজসমূহ:

খুব ভোরে ঘুম থেকে ওঠা। নিজ মহল্লার মসজিদে ফজরের নামায আদায় করা। মিসওয়াক করা। উত্তম রূপে গোসল করা। সাধ্যমত উত্তম পোশাক পরিধান করা। খোশবু ব্যবহার করা। নামাযের জন্য ঈদগাহে যাবার আগ সদকায়ে ফিতর আদায় করা। মিষ্টি জাতীয় দ্রব্য বা বেজোড় সংখ্যক খেজুর খেয়ে ঈদগাহে যাওয়া। পায়ে হেঁটে ঈদ গাহে যাওয়া। ঈদ গাহে একপথে যাওয়া , অন্য পথে পত্যাবর্তন করা। ঈদের নামায ঈদ গাহে আদায় করা। ঈদ গাহে যাওয়া এবং আসার সময় নিম্নক্তো তাকবীর আস্তে আস্তে বলা- (“আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, লা- ইলাহা ইল্লালাহু আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, ওয়ালিল্লাহিল হামদ্‌।”) সামর্থনুযায়ী অধিক পরিমান দান-খয়রাত করা। ঈদের দিনে চেহারায় খুশি ভাব প্রকাশ করা এবং কারো সাথে দেখা হলে, হাসিমুখে কথা বলা উচিত।

সাদকাতুল ফিতর:

আমাদের প্রতি আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের আরেকটি অনুগ্রহ যে তিনি আমাদের ইবাদত-বন্দেগীতে কোন ত্রুটি হলে তার ক্ষতি পুষিয়ে নেয়ার ব্যবস্থা রেখেছেন। যেমন নফল নামায দ্বারা ফরজ নামাযের ক্ষতি পুষিয়ে নেয়ার ব্যবস্থা রেখেছেন। এমনি সিয়াম পালনে যে সকল ত্রুটি-বিচ্যুতি হয়ে থাকে তার ক্ষতি পুষিয়ে দেয়ার জন্য সাদকাতুল ফিতর আদায়ের বিধান দিয়েছেন। সাথে সাথে দরিদ্র ও অনাহারক্লিষ্ট মানুষেরা যেন ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে পারে সে ব্যবস্থাও দিয়েছেন। কেউ যেন অর্থাভাবে ঈদের খুশি থেকে বঞ্চিত না থাকে সে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য ইসলামী সমাজকে এ বিধান দিয়েছেন। এ ফিতরা আদায়ের মাধ্যমে মানুষ আল্লাহর নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় করে থাকে। তিনিই তো সিয়াম পূর্ণ করা ও রমজানের রাতে কিয়াম সহ অন্যান্য নেক আমল এবং কল্যাণকর কাজ করার তাওফীক দিয়েছেন। আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেন ” নিশ্চয় সাফল্য লাভ করবে সে, যে শুদ্ধ হয় এবং তার পালনকর্তার নাম স্বরণ করে, অতঃপর সালাত আদায় করে ” [ সূরা আলা ১৪-১৫]

আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদিআল্লাহু আনহু বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সদকাতুল ফিতর ওয়াজিব করেছেন অশ্লীল ও অনর্থক কথা-বার্তার কারণে সিয়ামে ঘটে যাওয়া ত্রুটি-বিচ্যুতিগুলো দূর করার জন্য ও মিসকিনদের খাদ্য প্রদানের জন্য। ঈদের সালাতের আগে আদায় করলে তা সদাকাতুল ফিতর হিসাবে গণ্য হবে। আর ঈদের সালাতের পর আদায় করলে তা অন্যান্য সাধারণ দানের মত একটি দান হিসেবে গন্য হবে। [আবু দাউদ ও ইবন মাজাহ]

সাদকাতুল ফিতরের অর্থ:

সদকাতুল ফিতর অর্থ ফিতরের দিনের সদকা। ফিতর বলতে ঈদুল ফিতর বোঝানো হয়েছে। অর্থাৎ, ঈদুল ফিতরের দিন দেয়া সদকাকেই সাদকাতুল ফিতর বলা হয়। একে যাকাতুল ফিতর বা ফেতরাও বলা হয়ে থাকে।

সাদকাতুল ফিতরের বিধান:

সদকাতুল ফিতর ওয়াজিব। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা মুসলিমদের উপর আবশ্যক করেছেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যা আদেশ করেছেন তা আল্লাহ তাআলা কর্তৃক আদেশ করার সমতুল্য। আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেন : ‘আর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্ল তোমাদের যা আদেশ করেন, তা গ্রহণ কর এবং যা নিষেধ করেন, তা থেকে বিরত থাক (সূরা হাসর ৭)

কার ওপর ওয়াজিব :

ইমাম আবু হানীফা রহ. এর মতে ঐ ব্যক্তির উপর সদকাতুল ফিতর ওয়াজিব যে ঈদের দিন ভোরে প্রয়োজনের অতিরিক্ত সম্পদ হিসেবে সাড়ে সাত তোলা স্বর্ণ বা সাড়ে বায়ান্ন তোলা রৌপ্য বা সম-পরিমাণ সম্পদের মালিক। তবে যাকাতের ন্যায় এক্ষেত্রে এক বৎসর অতিক্রান্ত হওয়া জরুরী নয়। সামর্থ্যবান না হলে সদকাতুল ফিতর ওয়াজিব হবে না।

কার পক্ষ থেকে আদায় করা ওয়াজিব:

নিজের পক্ষ থেকে এবং নিজের অপ্রাপ্ত বয়স্ক সন্তান বা অবিবাহিত মেয়ের পক্ষ থেকে আদায় করা ওয়াজিব। সন্তানের নামে সম্পদ থাকলে সেখান থেকে আদায় করা যাবে। প্রাপ্ত বয়স্ক সন্তানের পক্ষ থেকে আদায় করা ওয়াজিব নয়। কোনো এতিম শিশুর ভরণপোষণের দায়িত্ব নিয়ে থাকলে তার পক্ষ থেকেও আদায় করতে হবে।

কখন ওয়াজিব হয়:

সদকাতুল ফিতর ঈদুল ফিতরের ভোর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ওয়াজিব হয়। কাজেই সেদিন ভোরের আগে যে জন্ম নিয়েছে, বা এই পরিমাণ সম্পদের মালিক হয়েছে, তাকেও এই সদকা আদায় করতে হবে। কেউ যদি সেদিন ভোরের আগে মারা যায়, তার ওপর সদকা ওয়াজিব হবে না। আবার ভোর হবার পর কেউ জন্ম নিলে তার পক্ষ থেকেও সদকা আদায় করা ওয়াজিব হবে না।

কখন আদায় করতে হয়:

ঈদুল ফিতরের দিন সকালে ঈদের নামায পড়তে যাওয়ার আগে সদকাতুল ফিতর আদায় করা উত্তম। তবে যাকাতের ন্যায় সেই সময়ের আগেও আদায় করা যেতে পারে। আবার কোনো কারণে সময় মতো আদায় করতে না পারলে পরেও আদায় করা যাবে। কেউ আদায় না করে মৃত্যুবরণ করলে তার পক্ষ থেকে তার উত্তরাধিকারী আদায় করে দিলেও আদায় হয়ে যাবে। ওয়াজিব হচ্ছে, সদকাতুল ফিতর তার প্রাপকের হাতে সরাসরি বা অন্য কোন মাধ্যমে যথাসময়ে সালাতের আগে পৌঁছানো। যদি নির্দিষ্ট কোন ব্যক্তিকে প্রদানের নিয়ত করে, অথচ তার সঙ্গে বা তার নিকট পৌঁছতে পারে এমন কারো সঙ্গে সাক্ষাত না হয়, তাহলে অন্য কোন উপযুক্ত ব্যক্তিকে প্রদান করবে, বিলম্ব করবে না।

সাদকাতুল ফিতর কাকে দেবেন:

নিজ এলাকার অভাবী ও দরিদ্র যারা যাকাত গ্রহণের অধিকার রাখে এমন অভাবী লোকদেরকে। ঋণ আদায়ে অক্ষমকে প্রয়োজন পরিমাণ ফিতরা দেয়া যাবে।

আসুন, আমরা আল্লাহর দেয়া উপহার গুলো দুহাত ভরে কুড়িয়ে রামাযানকে আরও অর্থ বহ করে তুলি। আল্লাহ আমাদের তাওফীক দান করুন। আমীন।