ধর্ম

আখেরী চাহার সোম্বাহ (জানুন বিস্তারিত)

সেনানী ডেস্ক

আখেরী চাহার সোম্বাহ

আখেরী চাহার সোম্বাহ হলো ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের পালিত অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ একটি দিবস। আখেরী চাহার শোম্বা একটি আরবী ও ফার্সি শব্দ-যুগল; এর আরবী অংশ আখেরী, যার অর্থ “শেষ” এবং ফার্সি অংশ চাহার শোম্বা, যার অর্থ “বুধবার”। আর সফর মাসের শেষ বুধবারকে আখেরি চাহার সোম্বাহ বলে।

ঘটনা

১| ১১ হিজরির শুরুতে রসূলুল্লাহ (দ.) গুরতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। ক্রমেই তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। তিনি এতটাই অসুস্থ হয়ে পড়েন যে, নামাজের ইমামতি পর্যন্ত করতে পারছিলেন না। ২৮ সফর বুধবার মহানবী (দ.) সুস্থ হয়ে ওঠেন। দিনটি ছিল সফর মাসের শেষ বুধবার।

 

 

এই দিন কিছুটা সুস্থবোধ করায় রসূলুল্লাহ (দ.) গোসল করেন এবং শেষবারের মত নামাজে ইমামতি করেন। মদীনাবাসী এই খবরে আনন্দ-খুশিতে আত্মহারা হয়ে গেলেন এবং দলে দলে এসে নবী (দ.) কে একনজর দেখে গেলেন। সকলে তাদের সাধ্যমতো দান-সাদকা করলেন, শুকরিয়া নামাজ আদায় ও দোয়া করলেন।

২| হুজুর সাইয়্যিদে আলম সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল­লাম’র প্রতি ইহুদীগণ যাদু করেছিল এবং এর বাহ্যিক প্রভাব তাঁর দেহ মোবারকের বহির্ভাগে ক্রিয়াশীল হওয়ায় তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। অতঃপর হযরত জিব্রাঈল আলায়হিস্ সালাম আল্লাহর হুকুমে তাঁর হাবীবকে এ সম্পর্কে অবহিত করেন।

 

 

অতঃপর প্রভাব নষ্ট করার পর হুজূর সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম এ সফর মাসের শেষ বুধবার সুস্থতা বোধ করেন এবং গোসল করেন। নিম্মে বর্ণিত কার্যদ্বারা এ দিন উদযাপন করা অত্যন্ত — উপকারী ও ফলদায়ক। সারা বৎসরের বালা-মছিবত, রোগ-শোক থেকে আল্লাহ’র কাছে পানাহ চাইতে এ আমল অত্যন্ত ফলপ্রদ বলে সূফী সাধক ও আলেমগণ মত প্রকাশ করেন।

সাহাবীগণের খুশি:

নবীর রোগমুক্তিতে সাহাবা কেরামগণ এতটাই খুশি হয়েছিলেন যে, তাদের কেউ দাস মুক্ত করে দিলেন, কেউবা অর্থ বা উট দান করলেন; যেমনঃ আবু বকর সিদ্দিক (রা) ৫ হাজার দিরহাম, উমর (রা)৭ হাজার দিরহাম, ওসমান ১০ হাজার দিরহাম, আলী (রা) ৩ হাজার দিরহাম, আবদুর রহমান ইবনে আউফ (রা) ১০০ উট দান করেন।

 

 

আমল :

এদিন সূর্যোদয়ের পূর্বে গোসল করা উত্তম। অতঃপর সুর্যোদয়ের পর দোহার নামাযান্তে— দুই রাকাত নফল নামায পড়া যায়। প্রতি রাকাতে সূরা ফাতিহার পর এগারবার সূরা ইখলাস বা কুল হুয়াল্লাহু আহাদ, সালাম ফিরানোর পর সত্তরবার বা ততোধিক দরূদ শরীফ পাঠ করে নিম্মের দু‘আ তিনবার পাঠ করবেন-

উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা র্ছারিফ আন্নী ছুআ হা-যাল ইয়াওমা ওয়া আছিমনী মিন ছু-য়িহী ওয়ানাযযিনী আম্মা আছাবা ফীহি মিন নাহূছাতিহী ওয়া কুরবাতিহী বিফাদ্বলিকা এয়া দাফিয়াশ শুররি ওয়া ইয়া মালিকান নুশূরি এয়া আরহামার রাহিমীন; ওয়া সাল্লাল্লাল্লাহু আলা মুহাম্মাদিন ওয়া আলিহিল আমজাদি ওয়া বারাকা ওয়া সাল্লাম।