সদরুশ শরীয়ত আল্লামা মুফতি আমজাদ আলী আযামী (রহ:)’র জীবনী

প্রাথমিক জীবন:

সদরুশ শরীয়ত, বদরুত ত্বরীকত, মুহসিনে আহলে সুন্নাত, খলিফায়ে আলা হযরত, মুসান্নিফে বাহারে শরীয়ত হযরত আল্লামা মুফতি মুহাম্মদ আমজাদ আলী আজমী রেজভী সুন্নি হানাফি কাদেরী বরকতী (রহমাতুল্লাহি আলাইহ) ১৩০০ হিজরী মােতাবেক ১৮৮২ খ্রিষ্টাব্দে পূর্ব ইউপি (ভারতের) অন্যতম বড়গ্রাম মদিনাতুল উলামা গুছীর মধ্যে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর সম্মানিত পিতা হাকীম জামালুদ্দিন (আরবী) এবং দাদা হুযুর খােদা বখশ (রহ:) চিকিৎসাশাস্ত্রে অত্যন্ত অভিজ্ঞ ছিলেন ।

প্রাথমিক শিক্ষা:

নিজ দাদা মাওলানা খােদ বখশ থেকেই নিজ বাসগৃহে তাঁর শিক্ষা জীবন শুরু হয়। এরপর তাঁর গ্রামস্থ নাসিরুল উলুম মাদরাসায় ভর্তি হয়ে গােপালগঞ্জের প্রসিদ্ধ আলেম মাওলানা ইলাহী বখশ থেকে কিছু ইলম অর্জন করেন। এরপর জৌনপুর গিয়ে নিজ চাচাতাে ভাই এবং শিক্ষক মাওলানা মুহাম্মদ সিদ্দিক (রহমাতুল্লাহি আলাইহ) এর কাছে আরো কিছু ইলম অর্জন করেন। এরপর তিনি পতিতযশা আলেম হযরত আল্লামা হেদায়াতুল্লাহ (রহঃ) থেকে ইলমে দ্বীনের মহাসমুদ্রের পানি পান করে তাঁর জ্ঞান তৃষ্ণা নিবারণ করেন। এখান থেকেই তিনি দরসে নিযামী সমাপ্ত করেন।

অতঃপর হাদিস শাস্ত্রে গভীর জ্ঞান অর্জনের নিমিত্তে উস্তাযুল মুহাদ্দেসীন হযরত মাওলানা আছি আহমদ সুরাতী (রহ:) সান্নিধ্যে যান। হাদিস শাস্ত্রে বিজ্ঞ এই পন্ডিত তাঁর সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে বলেন, আমার কাছ থেকে কেবল আমজাদ আলীই পড়েছেন।

স্মরণশক্তি:

সদরুশ শরীয়া, বদরুত তরীকাহ আল্লামা মুফতি মাওলানা আমজাদ আলী (রহঃ) ছিলেন অসাধারণ স্মরণশক্তির অধিকারী। অসাধারণ এ স্মরণশক্তির কারণে সবার আগেই তিনি পড়া আত্মস্থ করতেন। কোন কিতাব একবার পড়লে বা শুনলেই বছরের পর বছর তাঁর স্মরণ থাকতো। কাফিয়া কিতাবখানা তিনি একদিনেই আত্মস্থ করেন ।

অধ্যাপনা:

সুবাহ বাহারে (হিন্দু পিন্ড) আহলে সুন্নাতের একটি অপ্রতিদ্বন্ধ মাদরাসা ছিল । এ মাদরাসার শায়খুল হাদিস পদে ছিলেন। তাঁর উস্তাদ হযরত মহাদ্দিস সুরাতী (রহ:) মাদরাসার পরিচালক কাজী আবদুল অহীদের অনুরােধে হযরত মুহাদ্দিস সুরাতী (রহ:) সদরে মুদাররিস পদে সদরুশ শরীয়া আল্লামা আমজাদ আলী (রহমাতুল্লাহি আলাইহ) কে নির্বাচিত করেন।

অধ্যাপনার প্রথম দিনেই তাঁর বিশাল জ্ঞান সাগরের সিন্ধুকের মণিমুক্তা দিকে সমস্ত ছাত্রদের জ্ঞানের কুড়েঘরকে সুসজ্জ্বিত করেন। চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে তাঁর সুনাম, সুখ্যাতি। মাদরাসার পরিচালক, জ্ঞানের সাগর কাজী আদুল ওয়াহীদ (রহঃ) তাঁর জ্ঞানে গভীরতায় মুগ্ধ হয়ে মাদরাসার দায়িত্ব তাঁর উপর ন্যস্ত করেন।

আলা হযরতের সান্নিধ্যে প্রথম উপস্থিতি:

এর কিছুদিন পর আল্লামা কাজী আবদুল ওয়াহীদ (রহ:) অসুস্থ হলে আলা হযরত, আজিমুল বরকত ইমাম আহমদ রেযা (রহঃ) তাকে দেখার জন্য রাওয়া হিল হিন্ড থেকে পিন্ডের মধ্যে তাশরীফ আনেন। সেখানেই আলা হযরত (রহ:) এর প্রথম সাক্ষাত লাভে ধন্য হন। অতঃপর শ্রদ্ধেয় শিক্ষক মহােদয় মুহাদ্দিস আল্লামা সুরতী (রহঃ) এর পরামর্শক্রমে আ’লা হযরত (রহঃ) এর হাতে বায়াত গ্রহন করেন।

চিকিৎসা বিদ্যা অর্জন:

কাজী আল্লাম আবদুল ওয়াহীদ (রহঃ) এর ইন্তেকালের পর কতিপয় অযােগ্য লােকদের কাজকর্মে অসম্ভুষ্ট হয়ে সদরুশ শরীয়া (রহঃ) বার্ষিক অবকাশে বাড়িতে গিয়ে মাদরাসা পরিচালনার পদ থেকে ইস্তফা দেন।

এরপর জীবিকা অন্বেষণের তাগিদে স্বীয় পিতার ওয়াসিয়াত মােতাবেক চিকিৎসা বিদ্যা অর্জনে আগ্রহী হয়ে ওঠেন।

এ লক্ষ্যে ১৩২৬ হিজরীতে লৌখনাে গিয়ে দু’বৎসর ধরে চিকিৎসা বিদ্যা অর্জন করেন। এরপর তিনি চিকিৎসা সেবায় মনােনিবেশ করেন।

আলা হযরত (রহ:) দরবারে:

জীবিকার তাগিদে ১৩২৯ হিজরীতে তিনি লৌখনাে গেলে তথায় স্বীয় উস্তাদ মুহাদ্দিস সুরাতী (রহঃ) এর সাথে সাক্ষাৎ হন। ইলমে দ্বীনের খেদমত বাদ দিয়ে চিকিৎসা সেবায় মনোনিবেশের কথা হলে উস্তাদজী ভীষণ মর্মাহত হলেন।

এরপর তিনি তাঁকে আ’লা হযরত (রহঃ) এর দরবারে যাওয়ার নির্দেশ দিয়ে নিজেই চিঠি মারফত লেখেন, যেন তাকে ইলমে দ্বীনের খেদমতে অন্তর্ভূক্ত করেন। বেরলভী শরীফে পৌছার পর আ’লা হযরত (রহঃ) অত্যন্ত স্নেহ করে তাকে বললেন- এখানেই থাক, আমার অনুমিত ব্যতিরেকে কোথাও যাবে না। এভাবে সেখানে ২ মাস অবস্থান করে রমযান মাসে ফিরে আসেন।

চিকিৎসা পেশা বাদ দিয়ে পুনরায় ইলমে দ্বীনের খেদমতে:

সদরুশ শরীয়া (রহঃ ) এ ব্যাপারে বলেন, আ’লা হযরত (রহঃ ) এর দরবারে যাওয়ার পর তিনি আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন- মাওলানা কী কাজ করেন? উত্তরে বললাম : চিকিৎসা পেশা। তিনি বললেন, হ্যা, চিকিৎসা পেশা ভালাে। কিন্তু এতে সকালে উঠে প্রশ্রাব দেখতে হয় (পরীক্ষা নিরীক্ষার জন্য)। তিনি বলেন, এরপর প্রশ্রাবের প্রতি আমার চরম ঘৃণা জন্মে। এরপর থেকে চিকিৎসা পেশা বাদ দিয়ে ইলমে দ্বীনের খেদমতে মনােনিবেশ করি।

বেরলভী শরীফে দ্বিতীয়বার হাযেরী:

বাড়ী যাওয়ার কিছুদিন পর বেরলভী শরীফ থেকে চিঠি পৌঁছে। তাতে বলা হয়েছে, আপনি তাড়াতাড়ি চলে আসুন। সুতরাং তিনি তৎক্ষণাৎ বেরলভী শরীফ চলে আসেন। এবার তিনি সরকারে আলা হযরতের সান্নিধ্যে আঠারাে বৎসর কাটান।

সদরুশ শরীয়া উপাধি:

আল মালফুজাত ১ম খণ্ড ১৮৩ পৃষ্ঠায় রয়েছে আ’লা হযরত ( রহঃ) ঐতিহাসিক দু’টি ফতােয়া দানের কারণে তাকে ‘সদরুশ শরীয়া’ উপাধি দান করেন।

শরয়ী কাজী:

একদিন সকালে আনুমানিক ৯ টার সময় আ’লা হযরত (রহঃ) বাইরে তাশরীফ এনে চেয়ারের উপর গালিচা বিছানাের নির্দেশ প্রদান করেন। সবাই তড়িগড়ি করে গালিচা বিছিয়ে দেন। এরপর আলা হযরত ( রহঃ) বলেন, আজ বেরলভীর মধ্যে শরয়ী কাজীর পদ প্রতিষ্ঠা করব। সদরুশ শরীয়াকে ডেকে ডান হাত ধরে তাকে কাজীর পদে বসিয়ে দিয়ে বলেন, আপনাকে আজ হিন্দু স্থানের জন্য কাজী নিযুক্ত করলাম।

আ’লা হযরতের জানাযার জন্য অসিয়ত:

ওসায়া শরীফের ২৪ পৃষ্ঠার মধ্যে আলা হযরত (রহঃ ) জানাযার ব্যাপারে নিম্নোক্ত অসিয়ত লিপিবদ্ধ করেন। তিনি বলেন, “আল মিন্নাতুল মুমতাযা মধ্যে জানাযার নামাযের যতগুলাে দোয়া লিপিবদ্ধ করেছি, তা যদি হামেদ রেযার স্মরণে থাকে তবে তিনি আমার জানাযা পড়াবেন নতুবা আমার জানাযা সদরুশ শরীয়াই পড়াবেন। এ থেকে বুঝা যায় সদরুশ শরীয়ার প্রতি ইমাম আলা হযরত (রহঃ) এর কতটুকু মুহাব্বত ছিল।

সদরুশ শরীয়ার মুহাব্বতের বৈশিষ্ট্য:

সদরুশ শরীয়ার সুযােগ্য ছাত্র এবং খলিফা হযরত মাওলানা সাইয়্যিদ জহীর আহমদ যায়দী (রহঃ) বলেন, আমি সাত বছর এ মহান হাস্তির সান্নিধ্যে ছিলাম। কিন্তু দীর্ঘ এ সময়ে আমি এমন কোন দোষ-ক্রটি দেখিনি, যা সাধারণত অন্যান্য মজলিসে পরিলক্ষিত হতাে। অর্থাৎ কারাে গিবত, চোগলখুরী, দোষ চর্চা ইত্যাদি থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত ছিল তার মজলিস। তাঁর চালচলন, আচার-ব্যবহার সবকিছু কুরআন সুন্নাহ্ মােতাবেক ছিল।

চরম ধৈর্য্য:

সদরুশ শরীয়া ছিলেন ধৈর্য্যের জ্যান্ত এক পাহাড়। বড় শাহজাদা মাওলানা হাকীম শামসুল হুদা সাহেব ইন্তেকাল করার পর তাকে খবর দেয়া হলে, তিনি তখন তারাবীর নামাজে ছিলেন। সংবাদ দাতাকে (আরবী) বলার পর বলেন, নামায আরাে আট রাকাত বাকী আছে, শেষ করেই যাবাে।

স্বপ্নে প্রিয় নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর দীদার:

তাঁর শাহাযাদী বনু মারাত্মক রােগে অসুস্থ হয়ে পড়লে শেফার জন্য কুরআনখানির ব্যবস্থা করা হল। খতম সমাপ্ত হলে উপস্থিতদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘আমার বনু ভীষণ রােগে আক্রান্ত, কোন চিকিৎসা কাজ হচ্ছে না। এরপর তিনি বলেন, আজ রাতে স্বপ্নে আমার প্রিয় নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমাকে বললেন, বনুর জন্য আসতেছে। অর্থাৎ তার আয়ুষ্কাল শেষ হয়েছে।

সুন্নাত অনুযায়ী জীবন যাপন:

সদরুশ শরীয়া সর্বদা রাসুলে আকরাম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর সুন্নাতানুসারে জীবন যাপন করতেন। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে রাসুলে পাক (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর সুন্নাতের অনুসরণ করাই ছিল তাঁর একমাত্র ব্রত।

নামাযের পাবন্দী:

সদরুশ শরীয়া বদরুল তরিকা ছিলেন নামাযের যথাযথ পাবন্দ। বলা হয়ে থাকে সদরুশ শরীয়া জীবনে কখনাে কাযা নামায পড়েন নি।

অসুস্থ অবস্থায়ও রােযা রাখা:

একদা রমযান মাসে তাঁর মারাত্মক সর্দি এবং জ্বরে আক্রান্ত হন। সাথে পানির পিপাসাও ছিল অধিক। এ অবস্থায় তিনি সাপ্তাহখানেক ছিলেন। এত মারাত্মক রােগেও তিনি রােযা ভঙ্গ করেন নি।

যাকাত আদায়:

বুখারী শরীফের ব্যাখ্যাকার শাহজাদা আল্লামা মাওলানা মুফতি মুহাম্মদ শরীফুল হক আমজাদী (রহঃ) বলেন : আমার শ্রদ্ধেয় পিতা প্রাথমিক জীবনে ব্যবসায়ী ছিলেন এবং তাঁর হিসাব-নিকাশও ছিল যথাযথ । সদরুশ শরীয়া (রহঃ) তাকে ডেকে সবকিছুর হিসাব করে যাকাত আদায় করতেন। তাঁর ঘর থেকে কোন ভিক্ষুক কখনাে খালি হাতে ফিরে যায় নি।

দরুদে রেজভিয়্যা শরীফ:

তিনি প্রতিদিন ফজরের নামায সমাপন্তে এক পারা কুরআন তেলাওয়াত, এক হিজব দরুদে দালায়েলুল খায়র পড়তেন। প্রত্যেক জুম’আর পর একশাত বার দরুদে রেজভিয়্যা শরীফ পাঠ করতেন। এমন কি যদি সফরে থাকতেন তবে যােহরের নামাযের পর পড়তেন।

স্বপ্নে প্রশ্ন সমাধান:

খলিলে মিল্লাত হযরত মুফতি মুহাম্মদ খলিল খান বরকতী (রহঃ) বলেন, একদা আমি একটা জটিল মাসআলা নিয়ে ঘুরপাক খাচ্ছিলাম। সমাধান করতে পারছিলাম না। এক পর্যায়ে আমি ঘুমিয়ে পড়লে আমার উস্তাদ সদরুশ শরীয়া ( রহঃ) স্বপ্নে এসে বললেন, ‘বাহারে শরীয়তের অমুক অধ্যায়ে এর সমাধান রয়েছে। প্রত্যুষে উঠে সত্যিই বাহারে শরীয়তে এর সমাধান খুঁজে পেয়েছি।

নাত শরীফ শ্রবণ:

তাঁর জীবনীতে দেখা যায়, তিনি অত্যন্ত শ্রদ্ধা ও ভক্তি সহকারে নাত শরীফ শ্ৰবণ করতেন। নাত শরীফ পাঠকালে তাঁর চোখ বন্ধ থাকতাে এবং বৃষ্টির ফোড়ার মতাে চোখ দিয়ে অশ্রু বের হতো।

মদীনা শরীফে হাজেরী এবং ইন্তেকাল:

খলিফায়ে সদরুল শরীয়া, পীরে তরীকত হযরত আল্লামা মাওলানা হাফেজ ক্বারী মুহাম্মদ মুসলেহ উদ্দীন সিদ্দিকী আল কাদেরী (রহঃ) বলেন, সদরুশ শরীয়া (রহঃ) এর সাথে মদিনাতুল আউলিয়া আহমদ আবাদ শরীফে (হিন্দুস্থান) হযরত সৈয়িদুনা শাহ আলম (রহঃ ) দরবারে উপস্থিত হবার সৌভাগ্য হল। তাঁরা উভয়ে নিজ নিজ আসনে বসে দোয়া করলেন। দোয়া শেষ হবার পর আমি আমার পীরে মুর্শিদ সদরুল শরীয়া (রহঃ) কে জিজ্ঞাসা করলাম, আপনি কী প্রার্থনা করেছেন? বললেন, প্রতি বছর হজ্বে যাওয়ার প্রার্থনা। আমি বুঝে নিলাম হযরতের মানসা হচ্ছে যতদিন তিনি জীবিত থাকবেন, ততােদিন যেন হজ্ব করতে পারেন। এই দোয়া আল্লাহর দরবারে কবুল হয়েছে। সেই বছরই তিনি হজ্ব করার নিয়্যত করেন। মদিনা শরীফের জাহাজে আরােহণ করার জন্য তাঁর নিজ গ্রাম মদিনাতুল উলামা গুসি হতে বােম্বাই আসেন। এখানে এসে পুনরায় জাহাজে আসার পূর্বেই তিনি ২ যিলকদ ১৩৬৭ হিজরী মােতাবেক ১৯৪৮ খ্রিষ্টাব্দে ইন্তেকাল করেন।

এমনভাবে তাঁর দোয়া আল্লাহর দরবারে কবুল হয়েছে যে, কিয়ামত পর্যন্ত এর সাওয়াব লাভ করবেন। তিনি নিজেই বাহারে শরীয়তের ৬ষ্ঠ খণ্ডের ৫ পৃষ্ঠায় বলেছেন; একটি হাদিস শরীফ বর্ণনা করেছেন যে, “হজ্ব করার জন্য কেউ বের হয়ে মৃত্যুবরণ করলে কিয়ামত পর্যন্ত হজ্বের সাওয়াব, কেউ ওমরার নিয়্যতে বের হয়ে মৃত্যুবরণ করলে কিয়ামত পর্যন্ত ওমরার সাওয়াব, আর কেউ জেহাদের জন্য বের হয়ে মৃত্যুবরণ করলে কিয়ামত পর্যন্ত গাজীর সাওয়াব পাবে। (মুসনাদে আবী ইয়ালা, ৫ম খণ্ড, ৪৪১ পূ. হা/৬৩২৭, দারুল কুতুব ইলমিয়্যাহ,
বয়রুত, লেবানন ।]

ইন্তেকালের তারিখ:

নিম্নোক্ত আয়াত (সূরা হিজর, আয়াত নং-৪৫) থেকে তিনি তাঁর ইন্তেকালের তারিখ বের করেন।
إن المتقين في جنات وعيون

মাজার শরীফ:

বােম্বাইয়ে ইন্তেকালের পর ট্রেনযোগে তাঁর আপন নিবাস মদিনাতুল উলামা গুসিতে নিয়ে আসা হয় এবং এখানেই তাকে দাফন করা হয় ।

কবরের মাটির শেফা:

মদিনাতুল উলামা গুসির মাওলানা ফখরুদ্দিনের পিতা মাওলানা নিযামুদ্দিন সাহেব ঘাড়ের মধ্যে পাথর হয়েছিল। অনেক চিকিৎসা করেও আরােগ্য হলো না। অবশেষে সদরুশ শরীয়ার কবরের মাটি ব্যবহার করলে পাথর দূরীভূত হয়ে যায়।

মাজার হতে সুগন্ধি:

সদরুশ শরীয়া (রহঃ) কে দাফন করার পর কয়েকদিন বৃষ্টি হয়েছিল । সুতরাং কবরের উপর চাটাই দেয়া হয়েছিল । আনুমানিক ১৫ দিন পর বৃষ্টি বন্ধ হলে মাজার নির্মাণের জন্য চাটাই সরিয়ে নিলে আতরের মতো তথা হতে সুগন্ধি বের হতে লাগলাে।