আওলাদে রাসুল, রাহনুমায়ে শরীয়ত ও তরিকত আল্লামা হাফেজ ক্বারী সৈয়দ আহমদ শাহ সিরিকোটি (রহ.) বাংলাদেশসহ ভারত উপমহাদেশে সিলসিলায়ে আলিয়া কাদেরীয়ার পুনরুজ্জীবন ঘটিয়েছেন।তারঁ আগমনের প্রায় দুইশ বছর আগে বাংলায় কাদেরিয়া সিলসিলার প্রতিনিধি হিসেবে মুরশিদাবাদের সৈয়দ আবদুর রাজ্জাক কাদেরিয়া সুফিধারার প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন। এরপর সিরিকোটি রহমাতুল্লাহি আলাইহি পাকিস্তান-আফ্রিকা-বার্মা হয়ে বাংলাদেশে আগমণ করে কাদেরিয়া তরিকার মুল ধারার প্রচার ও প্রসার ঘটান। একইসাথে তিনি ইসলামের সঠিক রূপরেখা আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআতের আক্বীদা ও সুফিবাদ প্রচারে জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলিয়া প্রতিষ্ঠা করেন।

যে প্রতিষ্ঠান আজ বিশ্বব্যাপী সুনাম অর্জন করেছে। তিনি মূলত এ বাংলা থেকেই ইসলামি শিক্ষা ও আধ্যাত্মিকতার পুনর্জাগরণ ঘটান। নগরীর ষোলশহরস্থ আলমগীর খানকাহ শরীফে আনজুমান-এ রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্ট ও জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলীয়ার প্রতিষ্ঠাতা আওলাদে রাসুল আল্লামা হাফেজ ক্বারী সৈয়দ আহমদ শাহ সিরিকোটি (র.)’র ওরশ মোবারক উপলক্ষে স্মারক আলোচনায় বক্তারা এ কথা বলেন।

তাঁরা আরো বলেন, বাংলাদেশে আল্লামা সিরিকোটি (র.) সফরকাল ছিল জীবনের শেষ ২৩ বছর। প্রথমে রেঙ্গুনে আসা যাওয়ার পথে যাত্রা বিরতিতে, এরপর ১৯৪২-১৯৫৮ পর্যন্ত নিয়মিত শীতকালীন সফরে এসে থাকতেন। এই সময়ে তাঁর হাতে হাজার হাজার মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন হয় এবং শরীয়ত-ত্বরিকতের ব্যাপক উন্নতিসহ ইসলামী শিক্ষা বিস্তারে নেতৃত্ব প্রদানের ফলে তাঁর হাতে সুন্নিয়তের পূনর্জীবন ঘটে,যা আজ সত্যনিষ্ঠ নিরপেক্ষ মহল অকপটে স্বীকার করেন। আজো তাঁর হাতে গড়া চট্টগ্রামের জামেয়া-আনজুমান বাংলাদেশের সুন্নিদের নির্ভরতার প্রধান ঠিকানা হিসেবে অব্যাহত আছে।

 

সিরিকোটি (র.) -এর প্রতিষ্ঠিত আন্জুমান হতে পরিচালিত হয় শতাধিক মাদরাসা। এছাড়াও ১৯৪২ সনে তাঁর প্রতিষ্ঠিত রাউজান দারুল ইসলাম মাদরাসা, যা বর্তমানে আনজুমান ট্রাস্ট হতে পরিচালিত। এভাবে সিরিকোটি (র.) এর হাতে পূনরুর্জীবন লাভ করেছে আরো বহু প্রতিষ্ঠান।

বক্তারা বলেন, সিরিকোটি (র.) -এর হাতে কাদেরিয়া ত্বরিকায় যেমন নতুন জোয়ার আসে, তেমনি এ দেশবাসী লাভ করে ‘‘মসলকে আলা হযরত’’ নামক সুন্নিয়তের বিশুদ্ধতম ধারার সন্ধান।

আনজুমানের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট আলহাজ্ব মোহাম্ম মহসিন সাহেবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত স্মারক আলোচনায় বক্তব্য রাখেন সংস্থার সেক্রেটারি জেনারেল আলহাজ্ব মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন। বিশেষ অতিথির মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, আনজুমানের অ্যাডিশনাল জেনারেল সেক্রেটারি আলহাজ্ব মুহাম্মদ সামশুদ্দীন, অ্যাসিস্টেন্ট সেক্রেটারি আলহাজ্ব মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন সাকের, প্রেস এন্ড পাবিলিকেসন্স সেক্রেটারি অধ্যাপক কাজী সামশুর রহমান, জামেয়ার চেয়ারম্যান অধ্যাপক দিদারুল ইসলাম, গাউসিয়া কমিটি বাংলাদেশের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব পেয়ার মোহাম্মদ।

হুজুর সিরিকোটি রহমাতুল্লাহি আলাইহির জীবন ও কর্মের উপর আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলিয়ার অধ্যক্ষ অল্লামা মুফতি সৈয়দ অছিয়র রহমান,আনজুমান রিচার্স সেন্টারের মহাপরিচালক আল্লামা এম.এ.মান্নান, আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা’আতের চেয়ারম্যান আল্লামা কাজী মঈনুদ্দিন আশরাফী, জামেয়ার প্রধান ফকিহ আল্লামা মুফতি আবদুল ওয়াজেদ, শায়খুল হাদিস আল্লামা হাফেজ সোলায়মান আনসারী, মুহাদ্দিস আল্লামা হাফেজ আশরাফুজ্জমান আলকাদেরী, অধ্যক্ষ আল্লামা বদিউল আলম রিজভী, আল্লামা জসিম উদ্দিন আজহারী, জামেয়া দায়েম নাজির জামে মসজিদের খতিব আল্লামা আবুল আসাদ জুবায়ের রজভী, গাউসিয়া কমিটির সিনিয়র ভাইস-চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আনোয়ারুল হক, মহাসচিব আলহাজ্ব শাহজাদ ইবনে দিদার, যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট মোছাহেব উদ্দিন বখতিয়ার।

মাওলানা হাফেজ আনিসুজ্জমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত স্মারক আলোচনায় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, গাউসিয়া কমিটি বাংলাদেশ দক্ষিণ জেলার সভাপতি আলহাজ্ব কমরুদ্দিন সবুর, উত্তর জেলার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জমির উদ্দিন মাস্টার,গাউসিয়া কমিটি চট্টগ্রাম মহানগর কমিটির আলহাজ্ব মাহবুবুল অলম, আলহাজ্ব তসকির আহমদ, উত্তর জেলার সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গির আলম চৌধুরী, দক্ষিণ জেলার সাধারণ সম্পাদক হাবিব উল্লাহ মাস্টার, মহানগর কমিটির আলহাজ্ব মাওলানা মোহাম্মদ আবদুল্লাহ, উত্তর জেলার প্রচার সম্পাদক আলহাজ্ব আহসান হাবীব চৌধুরী হাসান, অধ্যক্ষ আবু তালেব বেলাল, এরশাদ খতিবী, মাওলানা মনির উদ্দিন সোহেল, আলহাজ্ব মনোয়ার হোসেন মুন্না প্রমুখ।

এছাড়াও বিভিন্ন স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ও মাদ্রাসার অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ, প্রফেসর ও শিক্ষকগণ উপস্থিত ছিলেন।