জীবনী

উম্মুল মু’মিনীন হযরত খাদিজাতুল কুবরা (রাঃ)

>জন্ম:
উম্মুল মু’মিনীন হযরত খাদিজা (রাঃ) এর জন্ম হয় ‘আমুল ফীল’ (হাতীর বছর)-এর ১৫ বছর পূর্বে ৫৫৬ সনে মক্কা নগরীতে। অর্থাৎ রাসুলুল্লাহ সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নবুয়ত প্রকাশের ৫৫ বছর আগে পবিত্র নগরী মক্কায়।

>নাম:
নাম- খাদিজা। উপাধি- মুবারাকাহ, তাহেরাহ, কুবরা।উপনাম- উম্মে কাসিম, উম্মে হিন্দ, উম্মুল মু‘মিনীন, উম্মে জাহরা। পিতা- খুয়াইলিদ বিন আসাদ ও মাতা ছিলেন ফাতিমা বিনতে যায়েদ।

 

>হযরত খাদিজা (রাঃ)’র স্বপ্নঃ

 

রাসুল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর সাথে বিবাহ হওয়ার পূর্বে তিনি এক আশ্চর্যজনক স্বপ্ন দেখেছিলেন। সেই স্বপ্নের কথা তার চাচাতো ভাই ওরাকা বিন নওফলের কাছে বর্ণনা করেন। তার স্বপ্নটি ছিল এ রকম যে, আকাশ হতে আমার কোলে একটি চাঁদ নেমে আসল এবং সেটা আবার সাত ভাগে বিভক্ত হল। ওরাকা বিন নওফেল বলল: এই স্বপ্নের ব্যাখ্যা হল শেষ যুগে এক রাসূলের আবির্ভাব ঘটবে এবং তার সাথে তোমার বিবাহ হবে। আর সেই বিবাহের ফলে তোমাদের থেকে সাতটি সন্তান জন্ম নিবে।

>হযরত খাদিজার (রাঃ) সাথে হযরত মুহাম্মদের (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)এর সাক্ষাত ও বিবাহের প্রস্তাবঃ
হযরত মুহাম্মদ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) যখন ব্যবসার কাজে মক্কা থেকে শামে (সিরিয়া) গিয়েছিলেন, তখন খাদিজা (রাঃ) সাথে তাঁর পরিচয় হয়েছিল এবং তাঁর সাথে ব্যবসা বাণিজ্যের কাজ শুরু করেন। খাদিজা (রাঃ) হযরত মুহাম্মদ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর আখলাক ও চরিত্র দেখে মুগ্ধ হয়েছিলেন এবং তাঁর স্বপ্নের সাথে সব মিলে যাচ্ছিল। খাদিজা (রাঃ) মুহাম্মদ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কে ডাকলেন এবং তাকে বিয়ের প্রস্তাব দিলেন। কিন্তু হযরত মুহাম্মদ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এই প্রস্তাবে একটু চিন্তিত হলেন। হযরত মুহাম্মদ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) খাদিজা (রাঃ) এর প্রস্তাবের কথা তাঁর চাচা আবু তালেবকে বললেন। আবু তালেব এই প্রস্তাবের কথা শুনে অত্যন্ত খুশি হলেন এবং রাজী হলেন। হযরত খাদিজা ও মুহাম্মদ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের) এর বিয়ে অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা করলেন। খাদিজা (রাঃ) নিবিড় ভালবাসাকে মুহাম্মদ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) উপলব্ধি করেছিলেন,এমন সময় আকাশ থেকে শব্দ এলো ও বলল: “নিশ্চয়ই আল্লাহ পবিত্র নারীকে পবিত্র ও সত্যবাদী স্বামী দান করে থাকেন।” তখন তাদের চোখের সামনে থেকে পর্দা সড়ে যায় এবং বেহেস্তের হুরগুলো যে এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিল তা অবলোকন হয় এবং আতরের গন্ধ চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে আর সবাই বলতে থাকে যে, এত সুন্দর সুগন্ধ এই সততা থেকেই উৎসারিত হয়েছে। রাসুলের (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সাথে বিবাহ ১০ রবিউল আউয়াল নবুয়ত ঘোষণার ১১ বছর পূর্বে অনুষ্ঠিত হয়।

 

>সন্তানাদি:

 

রাসুলুল্লাহ সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর দুইজন শাহজাদা কাসিম, আবদুল্লাহ যাদের উপনাম তাহির ও তায়্যেব। এবং চারজন কন্যা সন্তান রুকাইয়াহ, যায়নাব, উম্মে কুলসুম, ফাতিমা (রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহুম) এর জননী ছিলেন আম্মজান খাদিজা (রাঃ)।

>জাহেলী যুগে যেমন ছিলেন হযরত খাদিজা (রাঃ):
আরব উপদ্বীপ মক্কায় প্রাচীন বংশধর কুরাইশ বসবাস করতো, পয়গাম্বরদের আদর্শ হতে দূরে থাকার কারণে, মূর্খের শাসন ও মূর্খতা এবং সে যুগের নোংড়া, অপবিত্র কার্যক্রমের ফলে এমন অবস্থা সৃষ্টি হয়েছিল যে, সেখানে আদর্শের কোন চিহ্নই ছিল না। যা কিছু দেখা যেত তা শুধুই বৈষম্য, অত্যাচার, নোংড়ামী, মতভেদ, যুদ্ধ, রক্তপাত, হিংসা, স্বার্থপরতা, ছন্নছাড়া, এবং লাগামহীনের খবরাদি। এ রকম এক অন্ধকার পরিবেশে একটি আদর্শ দম্পতি (খুয়াইলিদ ও ফাতিমা) হতে এক উজ্জল নক্ষত্রের আবির্ভাব ঘটে। এই উজ্জল নক্ষত্রটি হচ্ছে হযরত খাদিজা (রাঃ)। এই মহিয়সী নারী ৪০ বছর বয়সে রাসূলের (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) যাঁর বয়স তখন ২৫ বছর ছিল বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তিনিই প্রথম নারী ছিলেন যিনি ইসলামের উদয়ান্তে সর্ব প্রথম ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন । ২৫ বছর যাবৎ রাসুলের (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সাথে যুগল জীবন যাপন করেন। এই দিনগুলিতে সর্বদা পরাক্রান্ত ও আত্মত্যাগী সাথী, দয়াশীল বন্ধু হিসেবে রাসুলের (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সাথে ছিলেন।

 

তার সম্পর্কে হযরত আবু তালিব সেই অন্ধকার যুগে বলেছিলেন: খাদিজা (রাঃ) এমনই এক নারী যে সকল ক্ষেত্রে পরিপূর্ণ, বরকত ও সৌন্দর্য্যে ভরপুর। যার থেকে সব ধরনের অবজ্ঞা ও অপবাদ অনেক দূরে। সে এমনই নারী যে ব্যক্তিত্বসম্পন্ন ও সম্মানিত।

 

>হযরত খাদিজার (রাঃ) সম্পদঃ
খাদিজার (রাঃ) বৈশিষ্ট্যসমূহের মধ্যে একটি বৈশিষ্ট্য হলো ব্যবসা-বাণিজ্যে ও অর্থনীতিতে চেষ্টা-প্রচেষ্টার মাধ্যমে তার যুগের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি ও দৃষ্টান্তহীন করে নিজেকে গড়ে তুলেছিলেন। ঐতিহাসিকগণ হযরত খাদিজার (রাঃ) সম্পদকে তিনটি ভাগে বিভক্ত করেছেন। তার সত্তর হাজার উট ছিল যেগুলোর মাধ্যমে ব্যবসার রসদপত্র দেশের আভ্যন্তরে ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিভিন্ন স্থানে বহন করতেন।

 

তার বিশালাকার একটি গুদাম ঘর ছিল যে ঘরের উপরে সবুজ রেশমী কাপড়ের তৈরী সাইন বোর্ড ঝুলানো ছিল। সে ঘরটি ছিল বিভিন্ন ধরনের মাল সম্পদে ভরপুর।তার অনেকগুলি দাস-দাসী বা কর্মচারী ছিল যারা তার ব্যবসার রসদপত্র বিভিন্ন দেশে আমদানী বা রপ্তানী করতো।

 

>অভিযোগকারী নারীদের প্রতি হযরত খাদিজা (রাঃ)এর উপযুক্ত জবাবঃ
কুরাইশ বংশের একদল ত্রুটি অন্বেষকারী মূর্খ নারী হযরত খাদিজা (রাঃ) সম্পর্কে অভিযোগ ও উপহাস করতে লাগল। তারা উপহাস করে বলতো: ‘খাদিজার মত একজন প্রসিদ্ধ ও উচ্চ মর্যাদার অধিকারী বিত্তশালী নারীর এটা মানায় না যে একজন ইয়াতীম, রিক্তহস্ত, দরিদ্র ব্যক্তিকে বিয়ে করবে আর এটা কি নেক্কারজনক একটা বিষয় নয়?।’

 

যখন এই কথাটি হযরত খাদিজা (রাঃ)এর কানে পৌঁছালো তিনি তার কর্মচারীদেরকে সুস্বাদু খাবার তৈরীর নির্দেশ দিলেন। আর ঐ সকল নারীদেরকে দাওয়াত করলেন। যখন সবাই আহারে ব্যস্ত তখন হযরত খাদিজা (রাঃ) তাদের উদ্দেশ্যে বললেন- ‘হে নারী সমাজ! তোমরা নাকি হযরত মুহাম্মদ (রাঃ) কে বিয়ে করার বিষয়কে কেন্দ্র করে আমাকে উপহাস করছো। আমি তোমাদের কাছে জানতে চাই, ‘হযরত মুহাম্মদ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর মত ঐ ধরনের ভাল বৈশিষ্ট্যের অধিকারী দ্বিতীয় কোন ব্যক্তি কি তোমাদের নজরে আছে? মক্কা ও মদীনার আশে পাশে এমন ব্যক্তিত্ববান কেউ কি আছে যিনি হযরত মুহাম্মদের (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) মত চরিত্র ও মর্যাদার দিক থেকে এত সৌন্দর্য্যপূর্ণ এবং পরিপূর্ণতার অধিকারী? আমি তার এই পূর্ণতার কারণেই তাকে বিবাহ করেছি, আর এমন কিছু তার সম্পর্কে শুনেছি ও দেখেছি যা অত্যন্ত উচ্চ মর্যাদার অধিকারী। সুতরাং এটা উচিত নয় যে, তোমরা যা খুশি তাই বলবে ও অজ্ঞতাবশে কাউকে অশোভনীয় অপবাদ দিবে।’ হযরত খাদিজা (রাঃ)’র এ ধরনের হৃদয়গ্রাহী কথা শুনে সমস্ত নারীরা নিস্তব্ধ হয়ে গেলেন। তাদের এই নিস্তব্ধতা তারই সাক্ষ্য বহন করে যে, এ সম্পর্কে তাদের আর বলার মত কোন ভাষা নেই। হযরত খাদিজা (রাঃ) এ ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ বুদ্ধিমত্তার সাথে ও আল্লাহর সন্তুষ্টি চিত্তে তাদের কৃতকর্মের জবাব দিয়েছিলেন।

 

>ইসলামের অগ্রগতির ক্ষেত্রে হযরত খাদিজার (রাঃ) ধন-সম্পদের ভূমিকাঃ
হযরত খাদিজা (রাঃ) রাসুল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)এর সাথে বিবাহ হওয়ার পূর্বেও আরবদের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ ধনী হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তার প্রায় সত্তর হাজার উট ছিল ও বাণিজ্য কাফেলাগুলি দিবা-রাত্রি তায়েফে, ইয়েমেনে, শামে (সিরিয়ায়), মিশরে এবং অন্যান্য রাষ্ট্রে বাণিজ্যিক লেন-দেন করতো, তার অনেকগুলি ক্রীতদাস ছিল যারা তার ব্যবসার সাথে জড়িত ছিল।

 

হযরত খাদিজার (রাঃ) বিস্ময়কর আত্মত্যাগসমূহের মধ্যে একটি হচ্ছে রাসুলের (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সাথে বিবাহের পর ইসলাম পূর্ব ও ইসলাম পরবর্তী যত সম্পদ ছিল সমস্ত সম্পদ রাসুলের (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) অধীনে দিয়ে দিয়েছিলেন যাতে যেভাবে ইচ্ছা সেভাবে তিনি সেগুলিকে আল্লাহর পথে ব্যয় করতে পারেন।

 

এমন অবস্থা দাঁড়ালো যে, রাসুল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) দরিদ্র অবস্থা থেকে সম্পদশালী অবস্থাতে রূপান্তরিত হলেন এবং আল্লাহ তা’য়ালা তাঁর অনুগ্রহের অবদান সম্পর্কে রাসুলকে (সাল্লালাহুআলাইহি ওয়াসাল্লাম) উদ্দেশ্য করে বলতে গিয়ে এভাবে আয়াত অবর্তীর্ণ করেন- “আল্লাহ আপনাকে অভাবী অবস্থায় পেয়েছেন অতঃপর অভাবমুক্ত করেছেন” বর্ণনানুসারে অর্থাৎ হযরত খাদিজার (রাঃ) সম্পদের মাধ্যমে আপনাকে অমুখাপেক্ষী করেছেন।হযরত খাদিজার (রাঃ) ধন-সম্পদের ব্যয়ক্ষেত্র রাসুল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ইরশাদ করেছেন: “দুনিয়ার কোন ধন-সম্পদই আমাকে এতটা লাভবান করেনি যতটা খাদিজার সম্পদ করেছে।” এমতাবস্থায় এ প্রশ্ন মনে ভেসে উঠতে পারে যে, রাসুল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) খাদিজার (রাঃ) এই অঢেল সম্পদকে কোন পথে কিভাবে ব্যয় করলেন?

 

এ প্রশ্নের উত্তর হচ্ছে রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) খাদিজার (রাঃ) সম্পদ হতে ঋণগ্রস্থদের ঋণমুক্ত করার কাজে, রিক্তহস্তদেরকে সাহায্যের কাজে, ইয়াতীমদের প্রতিপালনের কাজে, মুসলমানরা যারা মক্কা থেকে মদীনায় হিজরত করত, মুশরিকরা তাদের মাল-সম্পদকে লুট করত, রাসুল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাদেরকে খাদিজার (রাঃ) সম্পদ থেকে সাহায্য করতেন যাতে তারা মদীনায় পৌঁছতে পারে। এক কথায়, রাসূল (রাঃ) যেভাবে ভাল মনে করতেন সেভাবে হযরত খাদিজার (রাঃ) সম্পদকে ব্যয় করতেন।

 

>তিরোধান:
উম্মুল মু’মিনীন খাদিজা (রাঃ) এর নবুয়ত প্রকাশের দশম বছরে ১০ রমজান ৬৫ বছর বয়সে পবিত্র নগরী মক্কাতে ইন্তেকাল করেন। আল্লাহর পক্ষ থেকে হযরত খাদিজার (রাঃ) কাফনের কাপড় এসেছিল। খাসায়েসুল ফাতিমিয়্যাহ গ্রন্থে বর্ণিত হয়েছে যে, প্রসিদ্ধ বর্ণনানুযায়ী বলা হয়েছে- যখন হযরত খাদিজা (রাঃ) ইন্তেকাল করেন, তখন আল্লাহর রহমতের ফেরেশতা তাঁর পক্ষ থেকে হযরত খাদিজার (রাঃ) জন্য রাসুল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)এর নিকট কাফনের বিশেষ কাপড় নিয়ে এসেছিলেন। রাসুল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) হযরত খাদিজার (রাঃ) পবিত্র দেহ মোবারক ঐ কাফনের কাপড় দ্বারা কাফন পড়ালেন। অতঃপর সঙ্গী-সাথীদেরকে নিয়ে তার লাশকে কবরস্থানে মোয়াল্লার দিকে নিয়ে যাচ্ছিলেন যাতে তাঁর (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) মাতা হযরত আমিনার পাশে কবরস্থ করতে পারেন। সেখানে হযরত খাদিজার (রাঃ) জন্য একটি কবর তৈরী করা হল ও রাসুল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সেই কবরের ভিতরে নামলেন এবং শুয়ে পড়লেন অতঃপর বাইরে বেড়িয়ে আসলেন। তারপর হযরত খাদিজার (রাঃ) দেহ মোবারককে দাফন করলেন।

 

>আমুল হুযনঃ

 

আল্লামা তাবারসী (রহঃ) লিখেছেন- হযরত খাদিজা (রাঃ) ও চাচা আবু তালিবের মৃত্যু রাসুল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)এর জন্য ছিল দু‘টি মর্মান্তিক ঘটনা। এই ঘটনাটি এতটাই মর্মান্তিক ছিল যে, রাসুল (সাল্লালাহুআলাইহি ওয়াসাল্লাম) অত্যন্ত অশান্তি ও অস্বস্তিবোধ অনুভব করতেন। আবু তালিব নবুয়ত ঘোষণার দশম বছরে ১৫ শাওয়াল মাসে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন আর ঠিক তার ৩৫ দিন পর হযরত খাদিজা (রাঃ) মৃত্যুবরণ করেন। এই দুই বিশ্বস্ত সঙ্গীর মৃত্যুর কারণে রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) অত্যন্ত দুঃখ-কষ্ট পেয়েছিলেন। সে কারণেই তিনি এই বছরকে আমুল হুযন বা দুঃখ-কষ্টের বছর নামে নামকরণ করেছেন।